( কবীর হুমায়ূন এর  অনুপ্রেরণায় আবার কবিতা লিখলাম। এ কবিতা খানি কবি  কবীর হুমায়ূন-কে  উৎসর্গ করলাম )


আমরা যুদ্ধে যাবো
শাহানাজ সুলতানা অধরা


পুবের আকাশে কুয়াশা-চাঁদর ভেদ করে
কমলা সূর্যটা দিচ্ছে উকি
নারকেল গাছটির পাশে ডুমুর গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে।
আপন খেয়ালে দোয়েল গাইছে গান,
সেই কোন ভোর থেকে কা কা স্বরে ডাকছে কাক,
এখনই লাজুক সূর্যটা ধরার বুকে ছড়িয়ে দেবে
তার জ্বালাময়ী তির্যক চোখের আগুন।


আনমনে তুমি কি ভাবছ, হে আমার মৃত্তিকা ?
তুমি কি ভাবছ, একান্ত গোপনে, তোমার জন্য
সোনার ছেলেরা বিলিয়েছে তাঁদের জীবন!
অথচ কি চেয়েছিলো তারা? আর কি পেয়েছে এখন?
তাঁরা চেয়েছিলো, তাদের রক্তের বিনিময়ে
যেন তার আদরিনী সোহাগী বোনটি ভালো থাকে,
ভালো থাকে যেন তার কলিজার টুকরোর মতো ভাই,
কিন্তু কেউ ভালো নেই- আমরা এখন ভালো নেই।


জননী আমার এখানে ন্যায়ের বিচার নেই,
এখানে মিথ্যার কাছে সত্য প্রতিনিয়ত লাঞ্ছিত হয়।
এ সুন্দর সাজানো গোছান সমাজকে
গুটি কয়েকটা ঘুণপোকা কুড়েকুড়ে খাচ্ছে।
তারা দিনকে দিন সংখ্যালঘু থেকে যেন সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে উঠছে;
দলাদলি আর ক্ষমতার লোভে মত্ত;
অর্থই আজ সকল অনর্থের মূল।


তবু, জীবন তো থেমে নেই। তুমি কেঁদো না জননী আমার!
ভেবো না সালাম, রফিক, আসাদ, মতিউর নেই বলে
এ দেশের ভার কেউ নেবে না। দেশমাতৃকার প্রয়োজনে তারা যুদ্ধে যাবেই, মা।
মাগো, আমরা তোমার সন্তান, চির তরুণ, নওজোয়ান!
এখানে অন্যায় কোনোদিন মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি, পারবেও না।


আমরা যুদ্ধে যাবো, মাগো, আমরা যুদ্ধে যাবো!
বাজাও তোমার রণ দামামা, আবার যুদ্ধে যাবো।
অন্যয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ,
সম্মান ও অস্তিত্ব বাঁচানোর যুদ্ধ!


২৫ ডিসেম্বর ২০১৭
সময় ভোর ৬.৩২