রাতে ঘুমিয়ে পড়ার আগে নয়নে আঁকি
একটি সোনালি ভোরের ছবি।
রাত পোহাতেই  পাণ্ডুর সূর্যটা জেগে উঠবে নতুন রূপে
পাখির কলকাকোলিতে স্নিগ্ধ ভোরের ডানায়
দুঃখজরা মুছে কড়া নাড়া দেবে পয়েলা বৈশাখ।
চোখ মুছতে মুছতে খুলে দেব দক্ষিণ দ্বার।


এক ঝাক দমকা বাতাস উঠবে মিষ্টি হেসে
ছড়িয়ে দেবে সূর্যে তার প্রখর তীব্রতা,
দিকেদিকে ধ্বনিত হবে কবি গুরুর সেই কালজয়ী গান-


"এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ
তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে,
বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক
যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে যাওয়া গীতি,
অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক।
মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,
অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।"


রমণীর অঙ্গে উঠবে লাল পেড়ে সাদা শাড়ি,
বাজবে রিনিক ঝিনিক কাচের চুড়ি
আত্মজরা সাজবে খয়েরি-লাল- সাদা পাঞ্জাবিতে
সমস্ত আঁধার, কুসংস্কার, অশিক্ষা, অপসংস্কৃতি ,
অজ্ঞতা দুরকরে জ্বলে উঠবে মঙ্গলদীপ।
কৃষ্ণচূড়া পলাশের মঞ্জুরিতে রঙিন হবে ভূবন
ঝড়ো বাতাসে পড়ে যাবে আম কুড়ানোর ধুম
যেন নিজেরি অজান্তে ফিরে পাওয়া দুরন্ত শৈশব।
লেখকের কলম খুঁজে পাবে অনকোরা শব্দমালা
কুয়াশা মোছা ভোরের আঙ্গিনায় তা
পঞ্চপদী দীপ হয়ে উঠবে জ্বলে
ভাবনার নিপুনতায় সৃষ্টি হবে গল্প,কবিতা, গান।


মহাজাগতিক নিয়মে ভাঙাগড়া, উত্থানপতন,
আনন্দ বেদনায় কেটে যায় তিনশ পঁয়শট্টি দিন।
কবিতা লেখার খাতার মতন কত মানুষ কাছে আসে আপন হয়
পুরাতন বছরের সাথে হারিয়েও যায় বহু মানুষ।
তবু ব্যস্তময় ভূবনে খুব ব্যাস্ততম মানুষের ভিড়ে
কুয়াশায় মোছা ভোরের আঙ্গিনায় নিজেকে খুঁজতে
মনোলোভা সুরের ঝংকার তুলে  ফিরে ফিরে আসে বৈশাখ।
৫ মার্চ ২০২১