মৌনতায় বারমাস
এস সুলতানা


                


শ্রাবণ সকালে চোখে চোখ রেখে
                       শিহরণ জাগালে প্রাণে,
ভাদ্রের ঘোর অবেলায়
আলতো ছুঁয়ায় গেলে হৃদয়ে আঁচড় কেটে।
আশ্বিনে এসে শিশিরে নেয়ে
মনে জ্বালালে স্বপ্নমাখা সুখের শিখা
কার্তিকে হলো মন বিনিময় মগ্ন মনের মৌনতায়।


অগ্রহায়ণে বলেছিলে তুমি সোহাগ মিশানো স্বরে
সুখ সোহাগী  সুখের নীড় বাঁধবো কোনো শুভক্ষণে।
পৌষে যে কি হলো  মনে,  তাকে ধরে রাখা হলো দায়
তুমি বিহনে সাধের যৌবন এলোমেলো হয়ে যায়
মাঘে এলো হাঁড় কাঁপা শীত তোমাকেই শুধু চাই।
দুরুদুরু বুক কাঁপে
পাছে লোকে কি জানি  কি ভাবে,
                   কি জানি কি হতে কি হয়ে যায়।
ফাল্গুনে ফুল ফুটলো কাননে রঙ মেখে সারা গায়
সাধের যৌবন ধরে রাখা হলো দায়।


কেনো আছো সরে ওগো প্রিয়জন,
আর দূরে থাকা নয়
ফুল শয্যা সুখায়ে যে যায় অভিমান ভরা লাজে
চৈত্র খরায় পোড়াতে চাইলো
                         প্রাণে জাগা সব প্রেম
এতোদিন যে স্বপ্ন এঁকেছে হৃদয় নয়ন হেম।
বৈশাখে এলো কাল বৈশাখী অকরুণ তাণ্ডবে
          উদাসী নয়নে বিষন্ন বলাকা,
ঝড়ে এই বুঝি ভাঙে ডানা।


কোলাহল শেষে এলো মধুমাস জ্যৈষ্ঠ
বাঁকা ঠোঁটের বক্র হাসির মায়াবী মায়ায়
কথা দিলে হেসে, মিথ্যে ভালোবেসে
শঙ্কা কেন মন-প্রাণ ছুঁয়ে যায়
আমি তো আছি,  
থাকবো পাশে  দিয়েছি তো এই কথা
তবে কেনো অকারণ পাও তুমি ব্যথা?
ভরসা রাখো আমি হবো তোমার ক্লান্তির ঘুম
তপ্ত দুপুর বেলা।
আরো বলেছিলে মৃত্তিকা মানবী বুকে  সোনার হালে  ফলাবে সোনালী ফসল।
সেই থেকে মনের ঘরের জানালা রেখেছি খোলা
তোমার আলো আসে যায় দিয়ে যাবে সুখ দোলা।


কালো বদনে আষাঢ় এলো থমথমে পরিবেশ
ঝাঁকুনি দিলো বাম হৃদয়ে সব হলো বুঝি শেষ।
এতো জল্পনা এতো কল্পনা
                     আষাঢ় ঢলে গেলো ভেসে
আহত পাখিটা পুটালো মাটিতে
ফিরে এলো শ্রাবণ ঝরে শ্রাবণ কান্না হয়ে,
কাজল আঁকা চোখে  
লোকে আজ ডাকে কুলটা বলে ছলনা প্রেমীর ছলে।
ভেতরে গায় বিষন্ন পাখি  
কেনো এলো প্রেম দিতে এই দাম
                   এই অবোধ মন কেমনে বাঁধে রাখি?


২৬ অক্টোবর ২০১৯