আমি ঠিকই বেঁচে আছি—
কোন এক মৃত্যুপুরিতে।
যেখানে সূর্য ওঠে ঠিকই,
আলো নেই মনের গভীরে।
মানুষ হাঁটে, হাসে, ঘামে,
তবুও ক্লান্তির নিচে চাপা পড়ে,
সকল চাওয়া- পাওয়া।
এখানে মানুষ নিজের ভিতরে
ধীরে ধীরে মরে যায়—
কখনো ভয়ে কিংবা অভিমানে।

বিষাক্ত বাতাসের ঘূর্ণিপাকে।
গলিত লাশের গন্ধে।
এই শহরে কেউ কারো নয়।
বন্ধুত্ব, প্রেম, দয়া—
সবই হিসেবের খাতায়।
যে অতীত গেছে রক্তে রাঙা,
সে-ই আজ ফেরে নতুন নামে,
নতুন পোশাকে।
কখনো শাসকের হুকুমে,
কখনো সভ্যতার দাসে।

আমি বুঝেছি—
মানুষের ওপর নাম যুদ্ধ।
ভালোবাসা আর ভয়ের,
মমতা আর প্রতিহিংসার।
এই যুদ্ধেই ক্ষয়ে যায় আত্মা—
কে কখন যে মৃত হয়ে যায়,
কেউ হেঁটে বেড়ায় কঙ্কালরূপে!
চোখ দেখে বোঝা যায় না।

ইতিহাস শুধু বইয়ে থাকে না,
সে ফিরে আসে মানুষের মুখে,
মানুষের রক্তে, আর মানুষের কান্নায়।
যে রাজা একদিন বিনা দোষে ফাঁসি দিত,
আজও সে বেঁচে আছে
কোনো আইন, কোনো ক্ষমতার মুখোশে।

তবুও, আমি বিশ্বাস করি—
অন্ধকার ঘনালে আলো খোঁজে মানুষ,
ঘুম ভাঙে একদিন,
ক্লান্ত হাতগুলো মুঠো হয় আশায়।
তখন জন্ম নেয় আন্দোলন,
তখন চিৎকার ওঠে—
“আমরা বাঁচতে চাই!”

একদিন আসবে,
যখন আকাশ আবার নীল হবে,
নক্ষত্রেরা ফিরবে অভিমান ভুলে,
আর মানুষ খুঁজে পাবে
একটা নতুন সকাল—
যেখানে মৃত্যুর মধ্যেও
থাকবে জীবনের গন্ধ।
চারিদিকে বিজয়ের উল্লাস।