বেঁচে থাকার ঝলমলে মশালে আমার ফুলকি উঁড়ার কথা ভেবে ফড়িং উড়লো শেষে,
চারুলতা-বনলতার কবিতা-গীতিময়ীতা
আটকাইতে পারে নাই তার জালে!

আমার জীবন বাহনের দোলনা দুলিতে দুলিতে
জালে আটকাইতে না পারা ফড়িং,
কোথায় কারে নিয়া আটকাইলো কোন রঙিন রংধনুর ভাঁজে!

সে হয়তো উড়েছে এমন এক আলোর দিকে,
যেখানে কোনো বাঁধা নেই, নেই চার দেয়ালের নামতা,
নেই কাব্যের খাঁচা, প্রেমের প্রহেলিকা,
নেই পুরোনো বাক্সবন্দি হওয়া ছবির মতো ছায়া!

ফড়িং যে আজ মুক্তির দূত,
তার পাখায় লেখা আছে অস্বীকারের ইতিহাস-
সে অস্বীকার করেছে চেনা পথের হাঁটাকে,চেনা মানুষটাকে,
সে বিদ্রোহ করেছে সুন্দরের নামে শিকল পরানোর রেওয়াজে!

চারুলতার দৃষ্টির ছায়া থেকে
সে ছুটে গেছে বনলতার নীরবতা ছাড়িয়ে,
সে উড়েছে এমন এক আকাশে,
যেখানে গীতিময়ীর গান-কবিতা আর টানে না,
শুধু হাওয়ার ডাক, ঝড়ের শিস,
আর অজানার মুগ্ধতা চিবিয়ে খাচ্ছে!  

ফড়িং উড়ছে-
কখনো সে একা, কখনো সে কারো হাত ধরে,
কিন্তু থামে না, আটকে পড়ে না,
তার পথ রংধনুর মতো বর্ণিল,
আর তার গন্তব্য-
যে আকাশে নাম নেই, ঠিকানা নেই-
তবু আছে এক ধ্রুবক ডাকে সাড়া দেওয়ার আনন্দ!

আর আমি?
আমি দাঁড়িয়ে আছি-
দু'চোখে দু ফোঁটা আলো নিয়ে,
বুকে ধরা না-পড়া হাওয়া,
আর অপেক্ষায়-
কখন ফড়িংটা ফিরে এসে বলবে-
“চল, এবার তুমিও উড়ো…”


কিন্তু আমি যে আর কখনোই উঁড়বোনা অন্যের ফড়িং হয়ে উঁড়া সে আকাশে!