যদি কবিতা লিখে মাঠ-ভর্তি ধান ফলানো যেত
আমি রক্ত দিয়ে লিখতুম সেই কবিতা
যদি কবিতার ছন্দে তৃষ্ণার্ত ভূমিতে ধারা-বর্ষণ হতো
আমি আমার হাড় মজ্জার নির্যাস মিশিয়ে
রচনা করতুম বৃষ্টির বন্দনা স্তোত্র
যদি কবিতা লিখে…
হায়, যদি কবিতা লিখে…
অনেকক্ষণ কান্নার পর ঘুমিয়ে পড়েছে যে শিশু
তার মতন দুঃখ-ছবি আমি আর কিছু দেখিনি জীবনে
যদি কবিতা লিখে…
নিভে যাওয়া উনুনের সামনে কেউ বসে আছে পেটের আগুন জ্বেলে
যদি কবিতা লিখে…
তিল ফুলের মধ্যে আস্তে আস্তে ঢুকে যাচ্ছে শোঁয়াপোকার ঝাঁক
যদি কবিতা লিখে…
ম্লান ছায়ায় উড়ে যাচ্ছে যার যার নিজস্ব পৃথিবী
শহর ছেড়ে যখনই যাই পল্লী আঘ্রাণ নিতে
মনে হয় আমি অন্য গ্রহের মানুষ
তোমার কষ্টে আমি গোপন রোদন করতে পারি
কিন্তু তা কবিতা হবে না
তোমার দুর্দশায় আমি প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে রাগে গর্জে উঠতে পারি
কিন্তু তা কবিতা হবে না
এ এক মায়া-দর্পণ, কবিতা, এই নিয়ে বিরলে কিছু খেলা
আমায় ক্ষমা ক’রো !


(কাব্যগ্রন্থঃ স্মৃতির শহর)