প্রতিবারের মতোই পয়লা বৈশাখ এসেছে
আমাদের এই বাংলায়, আর পাশের বাংলাদেশে।
কিন্তু এ যেন এক নতুন বছর, বড়ই নতুন সুর
জলের মতো সহজ স্রোতে বাজছে সুমধুর!
গঙ্গা হেসে বলছে পদ্মাকে,
‘এবার বুঝি আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ
পুরোনো চিন্তা ছেড়ে, নতুন সাজে সেজে
ভেঙে দেবে সব বেড়াজাল
পুরোনো বিদ্বেষ বিসর্জন দেবে সে যে
আমাদেরই বুকে!’


বাংলার যত অরণ্য, পাহাড় পর্বত
যত ধূলিকণা বাতাস, একই মাটির মাঝে
খুঁজে নেবে আজ তাদের হারিয়ে যাওয়া বিশ্বাস
সকল খেলায় কাজে
তাই সত্যি হাঁসি হাঁসছে আকাশ
শোনা যাচ্ছে পাখিদের কিচিমিচি, কলরব উচ্ছাস
আজ সারা বাংলা জুড়ে আবার নতুন করে
আনোন্দোৎসব হচ্ছে প্রতি বাঙালির ঘরে।


হ্যাঁ আজ পয়লা বৈশাখ,
একই রবির আলোয় ঝলমল করছে দেখো
চারিদিক, একই রবি-নজরুল গানে গাইছে দেখো
বাঙালির আনন্দিত মন, হয়ে নির্ভীক প্রাণ
কেউ পড়ছে দেখো পবিত্র কোরান,
কেউ দিচ্ছে হুলুধ্বনি, বাজাচ্ছে কেউ শাঁখ
সারা বাংলা জুড়ে শুনি এ কী নতুন গান!


এ যেন এক ভিন্ন পরিবেশ
অনেক দিনের হারিয়ে যাওয়া
পুরোনো বাংলাদেশ।


'ভালোবাসতে ভয় পায়না তারা
আর, অনেক দিন ধরে
ভাড়া করা ঝগড়া নিয়ে কেটেছে দিন
আর্তনাদ করে বহুকাল,
একই মা কে করেছে কাটাকাটি
তার বুকে ঝরিয়েছে রক্ত, চোখে জল
আজ দেখো, সেই জ্বলজ্বলে রাগ
কেমন জলাঞ্জলি দিয়েছে অকপটে
একই নদীর স্রোতে আমাদেরই তটে'
খিলখিলিয়ে বলছে গঙ্গা, পদ্মা বোনটিকে  
'পুরোনো অভিমান, দেখো ভিজে জল হয়েছে কেমন
উঠেছে ফুটে ফুলের মতো বাঙালির সুধী মন!'


এ আজ কোন পয়লা বৈশাখ?
ভিতরে বাইরে ভাঙছে দেয়াল
এতদিন যা ইচ্ছে হয়ে লুকিয়ে ছিল
সব বাঙালির বুকে
সত্যি হয়ে বেরিয়ে এলো আজ
শুভদিনে, আত্মহারা সুখে।


গাইছে দেখো সব বাঙালি হয়ে আকুল, হতবাক
এতদিনে এলো নতুন পয়লা বৈশাখ।