চুরির রকমফের
——————
        সুপ্রিয়া চৌধুরী
         —————-
এই তো সেদিন কালু ভুলু পড়লো ধরা চুরির দায়ে,
পকেট থেকে সরিয়ে ছিলো হাজার পাঁচেক দুই ভায়ে।
ফাঁসির সাজা শুনলো তারা,- শুনেই কুপোকাৎ-
আর কোথা যায়,- চোর পুলিশে চলছেই সংঘাত।


হঠাৎ শুনি অমুক সেনের নাম এসেছে
হৃদয় চুরির দায়ে !
মেয়ের হৃদয় চুরি গেছে কাঁদছে মেয়ে মায়ে ।
তমুক সেন (মেয়ের বাবা) চেঁচিয়ে বলে,-
ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ এ যে,-ঘোরতর ! প্রচণ্ড !
চাইছি তাই সাজা হোক্ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড !
না, - না,- এ ভারী অন্যায় !
এমন সাজা কি করে হয় ?
অমুক সেনের বাড়ীর লোকেরা মানছে না তায় !
চারদিকে তাই করছে লণ্ডভণ্ড !
তমুক সেন ও একরোখা, চলছে বাকবিতণ্ডা
চুরি ত হয় চুরি ই —
তার আবার কিসের জারিজুরি ?
অনুমতি ছাড়াই হৃদয় চুরি ? এবার ভুগতে হবে দণ্ড !
পুলিশের এক নামী দামী জ্ঞানী বলেন,—
এমন ধারায় হয়না দণ্ড-
মাফ্ চাইলেই এবার দণ্ড হবে খণ্ড !


এ আবার কেমন বিচার ?
এক চুরিতে ফাঁসী,
আর এক চুরিতে মাফ্ চাইলেই দণ্ড হবে খণ্ড ?
আমি তো তাই ভেবেই মরি,
এ কেমন তরো কাণ্ড !
চুরি—!
আহা ! কত রকমারি !!


তাই যদি হয়,- চুপি চুপি এটাও বলি-
আমরা—এই যে তুমি, আমি -
হামেশাই করি ভাবনা চুরি ! চিন্তা চুরি !
এ বুঝি নয় দণ্ডনীয় অপরাধ ?
জ্ঞানী বলেন,- আরে না,- না,
এ তো সৃজনশীলতা,- প্রতি মুহুর্তেই সংযোজন
সমৃদ্ধময় ভাবনার প্রকাশ- এর গতি যে অবাধ !!
আর জ্ঞান চুরি ?
এ সব শুনে পুলিশের তো চক্ষু চড়ক গাছ !
বলে,- না,- না,- এতে শাস্তির নেই রেওয়াজ !
জ্ঞানী বলেন,—শাস্তি আছে বটে !
ধন্যবাদ জানিয়ে দিও,—সবাইকে অকপটে !


—ধন্যবাদ !
—————————————————


[ সম্প্রতি মহারাস্ট্রে  হৃদয়চুরির অভিযোগ নিয়ে একজন তরুণ পুলিশের কাছে হাজির হন, কিন্তু হৃদয় চুরির অভিযোগ, কোন ধারায় পড়বে, কাকে ধরা হবে, কীভাবে হৃদয় ফেরত দেয়া সম্ভব, কিছুই আইনে না থাকায়, সব বুঝিয়ে পরে তাকে বাড়ী পাঠানো হয় !
এই ঘটনা অবলম্বনে (চুরি করে?) আমার এই নিবেদন।]