#পাঠশালা টু জী-স্কুল#

বাপ - কাকারা মানুষ গ্রামের পাঠশালাতে পড়ে,
মোরাও বড় হলাম তাদের দেখানো পথ ধরে।

কেউ বা হল ডাক্তার আর কেউ বা শিল্পপতি,
স্কুল কলেজে কেউ বা পড়ায়, কেউ বা ওকালতি।

ইস্কুলেতে ভর্তি হতাম বয়স যখন ছয়,
সহজপাঠ এর সঙ্গে ছিল বর্ণপরিচয়।

বগলেতে বইটা নিতাম, আসন নিতাম হাতে,
নামতাগুলো লেখা ছিল মোদের ধারাপাতে।

প্রথমভাগটা রপ্ত করলে বানান হত সোজা,
পাঠশালার ঐ পরিবেশটায় ছিল অনেক মজা।
  
আট - দশজন মিলেমিশে পরিবারে বাস
কেউ বা যেত অফিসে আর কেউ করত চাষ।

মা ঠাকুমা হেঁসেল ঘরে একসাথে কাজ করত
সবার মুখে অন্ন তুলে আনন্দে মন ভরত।

দিনের শেষে সবাই মিলে হাসি, ঠাট্টা, গান
ঠাকুরদাদা কল্কে হাতে হুকোয় দিত টান।

তাদের দেখে লাগত ভাল উদার হত মন
চুপিসারে সময়টা বেশ বদলেছে এখন।

স্বামী স্ত্রী আর এক সন্তান ছোট্ট পরিবার
মা বাবাকে একলা রেখে ছাড়ছি মোরা ঘর।

সন্তানেরে করতে মানুষ ফ্ল্যাট নিচ্ছি দূরে
বই, খাতা আর ব্যাগের বোঝায় দিচ্ছি তাদের মুরে।

জী - স্কুলে ভর্তি করছি এক লক্ষ ডোনেশন
মাসিক কিস্তি বারো হাজার, আট হাজারে টিউশন।

মায়েরা সব যাচ্ছে নিয়ে তারাই যেন ছাত্রী
নাচ, গান আর আঁকার ক্লাসে ফিরতে বাড়ি রাত্রি।

সকালেতে নিম- ব্রিঞ্জল, পটেটো রাইস খায়
রত্রিরেতে হোটেল থেকে ডিনার দিয়ে যায়।

সবাই মিলে স্কুলের মাঠে জমিয়ে করে গল্প
সাজি গুজি অনেক বেশি কারো খানিক অল্প।

অর্থ যাদের আছে তাদের যদিও এসব মানায়
স্ট্যাটাস রক্ষা করতে গিয়ে মধ্যবিত্ত দেনায়।

এত কিছুর পরেও বা কি ছেলে মানুষ হয়?
বাপ মাকে সে ছেড়ে পালায় কেউ যে কারো নয়।।