আত্মজ-আত্মজা কেউ বহুকাল ধারেকাছে  নাই
বার্ধক্য ভাতা যা কিছু প্রতিমাসে নামমাত্র পাই
দৃষ্টি-পথে প্রায়শই যথাযথ বস্তুত আসে না
তবু আমি পৃথিবীর মহামান্য আবশ্যক সেনা!
এখনও সংগ্রাম করি, ধুকেধুকে; বাঁচা ও মরার
মাঝপথে দাঁড়িয়েছি;অবশেষে ছোঁয়া ও ধরার
নাগালের থেকে বহু দূরে একা সে'ও চলে গেছে,
-এতোকাল ধ'রে যার হাত ধরে সময় কেটেছে।
এতোকাল ধরে যার মিথ্যাচার মহানন্দে শুনে
গর্বিত হয়েছি আমি, -'একসাথে যাবোই দু'জনে'!
সব কথামালা আজ সারমর্মে হয়েছে নীরব
নিশ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট; দুর্বিসহ বায়ু-পিত্ত-কফ;
লুপ্তপ্রায় স্মৃতিশক্তি, দৃষ্টিশক্তি মুছে গেছে প্রায়,
বারেবারে যমদূত অনিবার্য কড়া নেড়ে যায়।
তবুও জীবন গেয়ে ওঠে, পুনরায় ফিরে আসে
পরিচিত মানুষের অন্তরের গভীরের পাশে।
একদিন থেমে যাবে গাছেদের রসের উৎস্রোত;
থেমে যাবে গভীর সঙ্গমরত কপোতী-কপোত;
একদিন পৃথিবীর শ্বাসবায়ু থেমে যাবে, জানি
তবুও তো ধ্বংস নয়, -শেষ কথা বলে যাবে প্রাণ'ই।
অল্প-প্রাণ দেহে তবু এরকম ভাবনাসমুদয়
নিশ্চিত সত্য বলে প্রতিক্ষণে শুধু মনে হয়।
অর্ধ-অবচেতনায় এখনও স্বপ্ন দেখে চলি
যাত্রী আমি, ঘুরে ফিরি কাঙ্খিত সকল অলি-গলি;
কবিতা পরাগ এসে লেগে যায় প্রতীক্ষিত ঠোঁটে;
স্বপ্ন দেখি পূনরায় কলম বলিষ্ঠ হয়ে ওঠে ...