শীতের কুয়াশা এসে ভিজিয়েছে ভগ্ন শরীর
সারারাত জুড়ে আলোর চকমকি জোনাকীর
ঘুম তো আসে না এই প্রাচীন নোনাধরা চোখে
মন ও থাকে না মনে - ঘুরে কোন কল্পলোকে


কে যায় ঐদিকে - একটু কাছে আয় না বাপ
তারপর কয়েক পল একটুখানি চুপচাপ
একটু সময় পরে আবার ও হাঁক, কে যায়
পায়ের শব্দ শুনি, আয় না বাপ কাছে আয়


কেউই আসে না কাছে, কেউ এসে ধরেনা হাত
পড়ে থাকেন বারান্দার অন্ধকার কোণে দিনরাত
সারাটি জীবন দিয়ে-সবটুকু শরীর ক্ষয়ে ক্ষয়ে
এই বুঝি পরমপ্রাপ্তি হাতে আসে অবহেলা হয়ে


অন্ধ দুচোখ নিয়ে স্যাঁতস্যাঁতে অন্ধকারে বৃদ্ধা ঠাকুমা
মাঝে মাঝে হাঁক ছেড়ে ডাকেন-বৌমা কই তুমি মা
দুবেলা দুমুঠো জোটে সক্কালে একবেলাই গরম চা
অযত্নে কাটে দিন ক্লান্তিমাখা মুখে তবু গভীর মায়া


'বুড়ি মরে না কেন, হাড়মাস জ্বালিয়ে খেলে' শুনে শুনে
কান গেছে পচে, তবু যে কেন হাতের দাগ গুণে গুণে
পুত্র পৌত্রী দৌহিত্রের একপল দেখার অপেক্ষায় থাকা
দুহাতে তেলছিটে ক্ষত, তবুও দুহাত অসীম মায়ায় মাখা


কুয়াশায় বৃষ্টিতে শীতের রৌদ্রতাপে তিনি একাই থাকেন
বারান্দার অন্ধকারে মৃত্যুর দ্বারে বসে পিতামহী নিরুপমা সেন ।