********************
‘কী মিনষে রে বাবা, বলছি না তেলচাল বাড়ন্ত ঘরে,
ওঠার নাম নেই, বলি, কী, কথা যায় নাকি ওই কানে’
বলেই ধুপধাপ পা’ ফেলে বৌ অবশেষে মুখের পরে
বাজারের আধছেঁড়া থলে ছুঁড়ে মারে,  কেই না জানে
এ’তল্লাটে শঙ্কুদা’র মতো অলস মানুষ জন্মেনি আর
শুয়ে বসে দিন কাটে কাজের নামে গায়ে জ্বর ওঠে তাঁর

গায়ে আড়মোড়া ভেঙেও আবার ওপাশ ফিরে শুতে শুতে
‘এবেলা একটা কিছু করে নাও সোনা, শাক ভর্তা যা হোক’
ওবেলায় যাবো দেখো ঠিক, ঘুম লেগে আছে চোখ দুটোতে
বলেন শঙ্কুদা’ কণ্ঠে ফুটিয়ে মৌবনী ভালবাসা এক ঝলক

এমনই আধপেটা যে দিন কাটে অলসের রাজা শঙ্কুদা’র
তাতে দুঃখ নেই মনে, জমিজিরেত যা ছিল বাপঠাকুরদা’র
তা’ থেকে যাই জোটে কষ্টেসৃষ্টে যায় চলে বেকার জীবন
কাজ নিয়ে পাড়ায় কেউ কিছু বললেই খ্যাঁক খ্যাঁক হেসে
বলেন, ‘রাজার ছেলে কাজ করে তোরা দেখেছিস কখন’
সস্তাদামের বিড়ি ফুঁকেন- হাসতে হাসতেই উঠেন কেশে ।

হঠাৎ যদি পাড়ায় কারো বিপদ হল অমনি খোঁজ শঙ্কুদার
রাতের পর রাত জেগে, খাওয়া নেই নাওয়া নেই মানুষটার
হাসপাতালে কি শ্মশানে; কাছারী কি জেলখানাতে সবখানে
ছুটেন তিনি বিপন্ন প্রতিবেশীর সাথে, তা’ কিন্তু সবাই জানে

বিপদ যখন কেটে গেল, ফিরে এসে ঘরে একই স্বরূপ তাঁর
হেসে বলেন, তোরা বুঝিস না এ শরীরে বইছে রক্ত রাজার !!