যাদের পেটের চিন্তা নেই তাদের জীবনে কত রকমের শখ এসে ভর করতে পারে যদি সেই সব শখ চরিতের্থ করার মতো ইন্ধন যোগাবার অতিরিক্ত রসদ ও মজুত থাকে --।


তেমনই এক শখ পাখী দেখা বা 'Bird Watching", ফরেষ্ট পার্কটি বেশ বড় আকারের একটি পার্ক --এতে গ্রীষ্মের দিনে এসে ভিড় করে হাজারো পরিবার পিকনিক করার মানসে -- সারা গ্রীষ্ম জুড়েই চলে এই আয়োজন । আছে একটি মুক্তমঞ্চ-মাঝে মাঝে সেখানে নানা অনুষ্টান হয় । এই মুক্তমঞ্চটি এমন উন্মুক্ত পড়ে থাকলে আমাদের দেশে নানান রাজনৈতিক দলের মধ্যে মারামারি লেগে থাকতো দখলদারী নিয়ে ।


বিকালে হাঁটতে বেরিয়ে মুখোমুখি এক অভিনব দলের সাথে - ওরা জানতে চাইছিল পার্কের ভিতরে থাকা একটি হাজার বছরের পুরোনো পুকুরের মতই জলাশয়ের কথা । ওদের সাথে কথা বলতে বলতে  এগিয়ে যাওয়া হল সেই জলাশয়ের দিকে । চারদিকে ঘন বনের মতই অজস্র গাছ গাছালি, অসংখ্য পাখির ডাক, জলাশয় ভর্তি মাছ ও ক্চ্ছপ । কেঊ কেউ এসে এদের খাবার দিয়ে যায় নিয়ম করে । কেউ মারে না এদের ।


এর কাছাকাছি আসার সাথে সাথে ঐ দলের নেত্রী ধন্যবাদ দিয়ে বললেন - এবারে ওরা ব্যস্ত হবেন ওদের কাজে । কি কাজ ?        না, উনারা সকলে এবার মন দিয়ে নানান জাতের পাখি দেখবেন ও সম্ভব হলে পাখীদের বিরক্ত না করে ছবি  তুলবেন বা পাখীর ডাক রেকর্ড করবেন ।


ওদের সাথে থাকার অনুমতি মিলল । কি অবাক কাণ্ড ! কী বিশাল আয়োজন ওদের পাখী দেখার। অত্যাধুনিক ক্যামেরা থেকে শুরু করে অত্যন্ত উচ্চমানের রেকর্ডিং যন্ত্র ও অতি ক্ষমতাশালী দূরবীণ ওদের সাথে । কী গভীর মনোযোগের সাথে ওরা পাখী দেখছে ! ওদের মনোযোগ ও নিষ্টা দেখার মতোই । মশা বা পোকায় কামড়াবে কিনা তাতে কি ওদের ভয় নেই ! না, গায়ে মশা বা পোকার কামড় থেকে বাঁচার জন্যে একধরণের মলম মেখেছে সবাই ।


নেত্রীকে বলে চুপি চুপি কেটে পড়লাম, আমার গায়ে তো মলমও দেয়া নেই, হাতে দূরবীন ও নেই ।। কিন্তু ওদের অনন্যসাধারণ নিষ্টা দেখে মনে হলো এমন নিষ্টায় যদি আমরা সবকিছু করতে পারতাম !! তাহলে আমাদের দেশ শামীম ওসমানের মত জানোয়ার, এরশাদের মত লম্পট বা তাপস পাল এর মত ঘৃণ্য মানুষে ভরে যেতো না ।।
তাই কি সত্যি ---??  হয়তো বা ---, হয়তো না ।।