আমি একুশ দেখিনি
দেখেছি এর বর্ণমালার
জ্বলজ্বল তেজদীপ্ত ঔজ্জ্বলতা


আমি একুশ দেখিনি
দেখেছি শহীদ মিনারের
মাথা উঁচু করে সূর্য ছোঁয়ার অহম।
এখানে রাত ছিল
ফাগুনের মধ্যরাত
লাল-লাল শিমুলের
পাপড়িগুলো বিছিয়ে ছিল
থমথমে মখমল রাজপথ।


আমি একুশ দেখিনি
দেখেছি বঙ্গশিশুর
প্রথম কথার বুলি
অ-আ-ক-খ,
নিঃসঙ্কচে  সাদা বলাকার
মেঘে ওড়াওড়ি।


আমি একুশ দেখিনি
দেখেছি বৃষ্টির শব্দের মতো
কি এক স্নিগ্ধ মূর্ছনা
ছোট্ট বালিকার পায়ে
প্রথম ঘুঙূরের ঝঙ্কার
খালি পায়ে সৈকতে
হেটে চলার শিহরিত মূহুর্ত।


আমি একুশ দেখিনি
দেখেছি সহসা জল্লাদের মতো কিছু
হাত-পা-চোখ
কণ্ঠ থেকে কণ্ঠকে
জীবন থেকে জীবনকে
আর স্বপ্ন থেকে স্বপ্নকে
কেড়ে নেয়ার বর্বরতা।
এখানে রাত ছিল
গুমোট অন্ধকার রাত
রফিকের, সালামের, বরকতের
রক্তভেজা শার্ট আর
মরা বাড়ির মতো থমথমে শহর।


আমি একুশ দেখিনি
দেখেছি নদীর জল কেটে কেটে
এগিয়ে যাওয়া স্টীমারের ভেঁপু।
স্বচ্ছ জলের ভেতর
ছোট ছোট মাছের খেলা।


আমি একুশ দেখিনি
দেখেছি মাথা উঁচু করে
বিশ্বকে ছোঁয়ার আহবান
শিশুর হাতে স্লেট
কৃষকের হাতে লাঙ্গল
আর দলছুট বালকের হাতে
ঘুড়ি-নাটাই।
এখানে রাত ছিল
মাংসপোড়া অভিশপ্ত বসন্তের রাত
এখনও রাত আসে
তবে তা শুধুই প্রতীক্ষার
শুভ্র সকালের।