মোহররমের চাঁদ হেরি যবে শুরু হয় কিছু প্রথা
মুসলমান নামধারীরা কষ্ট করে শুধুই অযথা
পরে না জুতা, তুলে না ছাতা মাথার ’পরে
শোয় না খাটে, বিছিয়ে দেয় পিঠ মাটিতে-খড়ে
খায় শুধু নিরামিষ, দশদিনেরই ভোজে
এই করে হাসান-হোসাইনের (রাঃ) তরে শোক ভেজে।


তাদের মাঝে নেইকো নামায, নেইকো রোযা
নিজ হাতে গড়া ঘোড়া আর তাঁবুর করে পূঁজা
বাদ্য বাজিয়ে, মিছিল করে নিয়ে যায় কৃত্রিম কবরে
লাঠি খেলে পরে ফেলে তা ভেঙ্গে-চুরে
রক্তাক্ত করে দেহ তলোয়ার তীর দিয়ে
বুকে চাপড়িয়ে হাত শোক-গাঁথা গেয়ে
মর্সিয়া করে ছোট বড় সব বেহুশ হয়ে
তারপর লুটিয়ে পড়ে এই মাটির গায়ে
সায়াহ্ন বেলায় ঘরে ফিরে অশ্রুসিক্ত নয়নে
এই করে বিলায় শোক শুহাদা-ই-কারবালা স্মরণে।


কিন্তু এমনতর প্রথা পায়নি তো কেউ
কোনোদিন ধর্মশাস্ত্রের কোন পাতে
এমনতর রীতি থাকতো যদি কুরআন ও সুন্নাহতে
জ্ঞানীরা সব একজোট হতো তাদেরই সাথে
প্রথা পালনকারীদের কাছে প্রশ্ন রাখি
জেনেছেন কি, এ মৃত্যুর কারণ কি?


লক্ষ্য ছিল ন্যায়-নীতি আর সত্য ধর্মপ্রচারের
ঝরেছে তাই দ্বীনি তাজা প্রাণ আহলাল বাইয়িতের
শত সহস্র বছর হলো যে গত এর
রইলো কি বাকী আর এমন শোকের?
তিন দিনের বেশী নাইকো নিয়ম শোক পালনের
স্ত্রী শুধু পারে চল্লিশ দিনের।


পরিহার করো যতসব সামাজিক অনাচার
কৃত্রিম কবর, তাজিয়া-মর্সিয়া চাই না কিছু আর
নহে বিলাপ, খিঁচুড়ী পাকানো কিংবা ফকিরের সাজ
মাফি চাই তারই কাছে, যিনি রাজাধিরাজ
এ দিনের রোযা, কুরআন-খানি আর নীরব শোক
বেহেশতের পরম প্রশান্তির পথ করবে যে উন্মুখ।


[আশুরা; ১৯৯৩ খ্রীঃ]