আমার শহরের সব গলিতেই আমার প্রবেশ,
তবে সেদিন পথভুলে ওপাশের গলিতে,
মেইন রোড থেকে সামান্য দুরে, জায়গাটুকু'
ভিতরে প্রবেশ করেই চোখে পড়ল তাদের'
চশমা চোখে বিছানায় বসে আছেন কিছু মুরব্বিরা।
তাদের জন্য কেবল তারাই, দু দন্ড কথা বলার,
কেউ নেই সেথায়, জগত শুন্য দশমিক যেন তাঁরাই,
সাদাসিধা জীবনযাত্রায় তাল মেলাতে দেখলাম,
জিজ্ঞেস করলাম দায়িত্বরত কর্মচারিকে'
কেমন আছেন তাঁরা?
তিনি বল্লেন, সুখে নেই তাঁরা কেবল বেঁচে আছেন!
এই যে রুমটা দেখছেন, চারদিকে হাহাকার!
-ঐ যে মা' টি দেখছেন, ২ মাস হলো এখানে,
অথচ এই শহরেরই তাঁর ২টো বাড়ি!
৪ ছেলের জননী, সম্পত্তির ভাগ নিয়েছে সকলে,
মায়ের ভাগ কেউ নি, রাতের অন্ধকারে ৪ চাকার
গাড়ি চড়ে রেখে গেলেন জননীকে মা'কে।
তিঁনি রোজ বলতে থাকেন, আমার যদি
একটা মেয়ে থাকত!
-পাশের রুমেই একজন মুরব্বি বেশ গোছানো'
সবার নাড়ি দেখছেন, শুনলাম এক সময়কার
ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসক ছিলেন,
ছেলেরা বিদেশ থাকে, সব নিয়ে গেছে,
ওনার জায়গা হয়নি হাওয়াই নৌকায়।
-আর একজনের করুণ কথা,
বাবাহ আমি মুঠো ভর্তি সম্পত্তির মালিক নই,
খোঁকা জন্মের পরে তাঁরে বহু কষ্টে লালন-পালন,
করেছি, একেছি তাঁর জীবন কাহিনী।
শেষ বয়সে সন্তানরে যোগ্য বানিয়েছি,
তবে খোকার বউ পেয়েছি ভাগ্য করে,
সে মোরে সাজিয়ে নিয়ে এলো বৃদ্ধাশ্রমে।
- আমায় বলছেন, ঈদের আর মাত্র কদিন বাকি-
খোকারে নতুন পানজাবিতে দেখতে মন চায় ভিষণ
শুনেছি তাঁর ছেলে হয়েছে, দাদুর মাথায় হাত
বুলিয়ে চুমু আকতে মন চায় ভিষণ!
স্বাদের সেমাই খাইনি বহুদিন!
-মায়ের হাহাকার শুনেছি, বাবার আর্তনাদ দেখেছি,
কোথায় আত্মা ভাঙার বিষাদ, আর সেথায় মরীচিকা চোখেমুখে লেপ্টে আছে পিতা-মাতার
আত্মা মগজের গাঢ় ভাঁজে, রঙিন রঙিন সব দুঃখ!
আব্বু-আম্মুর পাশে থাকুন সাথে থাকুন!
তাঁদের সঙ্গ ছাড়বেন নাহ, নইলে,
তাঁরা বেঁচে থেকেও মরে যাবেন,
ইহজগতে আপনার কেউ নেই তাঁদের কেউ নেই।