একটি পাগল ,শায়িত
ঘুম-ঘুম চোখ তার, বিস্রস্ত কেশ, মুখভর্তি দাড়ি, ছেঁড়া পোশাক;
আর ময়লা ব্যাগটি বুকে আগলে রেখেছে ।
ব্যস্ত পায়ের ধূলি উড়ে পড়ে তার মুখে,শব্দ বয়ে যায় কানের পাশ দিয়ে
তবুও সে সাড়াহীন । অঘোরে ঘুমাই ।
রাত্রির স্টেশনে শেষ যাত্রী ,আমি আর ঐ পাগল ।
বুক হতে নামিয়ে আনি কৌতুহলী ব্যাগ,ব্যাগে
ছোট্ট পোড়া পুতুল,কানের দুল-চুড়ি আর একটি ডায়েরি ।
দুটি পাতায় লেখা


প্রথমপাতা:
"হয়তো কিছুক্ষনের মধ্যে ভুলে যাবো-
আমাকে,ভুলে যাবো এ পৃথিবী আর তোমাদের ।"


দ্বিতীয়পাতা:
"এ চোখ যা দেখলো তা নরক-কে লজ্জা দেয় ।
ঘরে ঘরে আগুন জ্বলছে,জ্বলছে আমার ঘরও;
অসহায় আমি,আমার কানে ভেসে আসে-
জ্বলন্ত ঘরে দু'টি জ্বলন্ত পিন্ডের আর্ত চিৎকার ;
একটি আমার মেয়ে আরেকটি তার মা ।
কতো মা কতো মেয়ে দলা পাকিয়ে পড়ে রয় রাস্তায় ঘরে-ঘরে ।


ওরা মানুষ ছিলো না ,ছিলো মানুষ জাতির কলঙ্ক ।


বাতাসের পোড়া গন্ধে আর হাহাকারে-স্নায়ু দুর্বল হয় চোখে ঘুম নামে ;
আমারতো ভীষন লজ্জা পাচ্ছে ঘেন্না লাগছে,ঈশ্বর তোমার কিছু হয়না।"


আঁধার ভেঙে পুবাকাশে সূর্য ওঠে;ওঠে না পাগলের বুকে ।
পাগলটি দাঁড়িয়ে-কাঁপা কাঁপা হাত বাড়িয়ে ,যেন বলছে-
দাও ফিরিয়ে দাও ওদের আমার এ শূণ্য বুকে ।ডায়েরিটা দিতেই-
বুকে জড়িয়ে হাঁটতে থাকে-মিশে যায় জনতার ভিড়ে ।