১(ভাবনা )


ওগো রাত ! মায়া রাত ! নিঝুম রাত !
ঘুমহীন করো মোর এ আঁখিপাত –
তারাদের গুনগুন পিছনে রেখে ,
মায়াভরা ঘনকালো রাত্রি-চোখে ;
যাবো উড়ে ডানা নিয়ে রাত-পরীর ,
দেশে দেশে খুঁজে নেবো তোমার ঘর ।


ঝরে পড়া জোছোনায় মৃদু-শিশিরে
ভিজে-ভিজে চুপি চুপি ললাট প’রে-
চুমু দিলে ক্ষণে ক্ষণে ভাঙে তন্দ্রা ,
কুঁড়ি হতে ফোটে ফুল -যেমন মুদ্রা ।
        
           ২ ( বাস্তব )


চমকিয়া উঠি, দেখি নয়ন তার
ভরে আছে মৃত্যু-নীল বেদনা ভার ।
    ………….ছন্দ ভেঙে ছার-খার !


ওগো বসুধা ! ক্ষমা করো ,
জানা নেই জন্ম-জন্মান্তরে পিতৃ-পুরুষেরা –
কত ঋণ রেখে গেছে তোমার নরম আঁচলে ?
তবুও চলো  -একবার আমার সাথে
স্তনিত ঝিলমিল সাগর পাড়ে ; -যেখানে আজো প্রতিরাতে
রাতপাখি দেওদারু ঝিনুক গুমরে গুমরে বাঁচে ;আমার মতো ।


আমি জানি-
তুমি ছাড়া এমন ভার কে বয়বে বলো ?
চলো বসুধা যাই  -সাগর পাড়ে দু’জনে পাশাপাশি কাটায় এই মায়া রাত ।
কাঁদো সারারাত যতক্ষণ আমি থাকি-
নোনা জলে মিশিয়ে আরো কিছু নোনা জল, একটু হাল্কা হও ।
সামনে যে আরো কঠিন মহাভার তোমাকেই সইতে হবে ।


আমি জানি  বসুধা !
তোমার বুকে বেড়ে ওঠা কষ্ট-পাহাড় , -কেনো শূণ্যতায় চেয়ে থাকে ?
এ যে আমার পিতৃ-পুরুষের ঋণ ! লজ্জায় নত হতে হতে মিশে যায় ,কাটা যায় দু’কান ।
প্রতি মুহুর্তে
এক অদৃশ্য আঁধার তোমাকে ছিঁড়ে খায় । আর
আমি দেখি প্রতিনিয়ত বোবা বধির হয়ে ; যেমন দেখেছে বাপ-দাদারা ।


বসুধা চেয়ে দেখো পুব আকাশে
আবার একটি দুর্বিসহ ভোর অপেক্ষায় ,তোমায় দেবে
আরো কত মৃত্যু যন্ত্রণা লাঞ্ছনা ভার । জানি
তুমি সব সব সয়ে যাবে নীরবে ; আমার মতো ।


রাত শেষ
এবার যেতে দাও ,মায়ায় বেঁধে আর ঋণী করো না ।
আবার মুখোমুখি হবো মহাশূণ্যে- তুমি আমি ।
তখন না হয় লিখবো এক কবিতা তোমায় নিয়ে-
শুধু প্রেমের ! শুধু প্রেমের ! অন্তহীন প্রেমের ।