খাঁ খাঁ বৈশাখ । গরমে নাজেহাল অবস্থা । ভরদুপুরের স্টেশন খানিকটা শান্ত বললেই চলে । কাকগুলো শেডে বসে জলের জন্য   কা---কা করছে ।     জাহান ব্যাগ হতে সদ্য কেনা জলের বোতল বের করে ঘট্
ঘট্ করে গলা ভিজিয়ে ,মুখ ডুবিয়ে দিল কাগজে । কখন একটি মেয়ে এসে তার পাশে বসেছে সে খেয়ালই নেই তার । দশ-বারো মিনিট পরে কাগজটা ব্যাগে ঢোকাতে গেলে, হঠাতই চোখ যায়  -একমনে মোবাইলে গেম খেলা মেয়েটির দিকে । প্রথমে কিছু বুঝতে পারেনি; তারপর নিমেষে তীব্র গতিতে এক ঝড়
ওঠে বুকে , অতীত দিনের ঝাপসা পাতাগুলো কেমন তরতর করে স্পষ্ট হয়ে ওঠে । সেই চোখ -এখনো নেশা ছড়ায়, ঘন চুল পিঠ জুড়ে কিছুটা নরম গাল ছূঁয়ে,সেই মায়াবী মুখ যেনো আরো মায়াময়। প্রচন্ড আবেগ তাড়িত হয়ে জাহান…… “না-জি-য়া” বলে ডেকেই ফেলে । মেয়েটি হতভম্ব হয়ে তার দিকে তাকায়……. বুকের ভেতর তর-বেতর ঢেউ খেলে যায়


জাহান : আমি জাহান ! কোলকাতা ………যাদবপুর …. সিভিল ইঞ্জিনীয়ারিং……কিছু মনে পড়ে !


নাজিয়া :  (তোকে তো এ জন্মে ভোলা যাবে না…..মনে মনে বলে )
জাহান : কি !  এখনো চেনা গেলো না ? (তুড়ি দিয়ে)
নাজিয়া : (একটু চমকে উঠে)…..ও..ও……….হ্যাঁ …হ্যাঁ
জাহান : যাক বাব্বা…আ… তাহলে ম্যাডামের রেটিনার আলোক সঞ্চালন ,পাসওয়ার্ড ভেঙে মনের দরজা            
          খুলেছে । অতি উত্তম ! অতি উত্তম ! তা সব ছেড়ে ছুঁড়ে কি করা হয় ?


নাজিয়া : কিছু না (বিমর্ষ ভাবে) । তোর খবর কি ?
জাহান : বিন্দাস ! এভরিথিং ইস ফাইন । অনেকগুলো অজানা উত্তরের খোঁজে প্রতিরাতে ঘুম হারাম হয়ে        
          গেছে ।তবে কি জানিস …একটা ছায়াভূত গত তিন বছর ধরে তাড়া করে বেড়াচ্ছে ।


নাজিয়া : সে কি ভূত না ভূতনী ?.......(দু’জনেই হাসতে হাসতে চোখে জল এনে ফেলে । ওরা ভুলেই          
গেছে এটা ওদের কলেজ নয় , লোকে দেখলেও কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই )
জাহান : (হাসতে হাসতে)…..এমন করলি কেনো ? এতটা স্বার্থপর হলি কি করে ? (গম্ভীর ভাবে) সব..      
           সব ভুলে গেলি; চলে আসলি….. ওড়ার ডানা ভেঙে, অন্ধ করে , সবুজ বন উজাড় করে । স্বপ্নেও  
           ভাবিনি তুই উপহার হিসাবে দিবি এমন নরক !


চলবে…………আর দুই পর্বে শেষ ।