গভীর রাতে মায়াবী কোনো নূপুরের শব্দে
বারবার আমার প্রেয়সী ঘুম ভেঙ্গে  যায়;
কে যে সে? কেন যে কানের কাছে মধুরতায়
নূপুরের শব্দ তুলে অবিরাম মন মাতায়?


গতকাল সারাদিন খুব ধকল গেছে আমার–
ক্লান্ত শরীর থেকে ঘুম ছুটতেই চায় না,
আধো-ঘুম, আধো জাগরণে শুনে যাই
সেই নূপুরের শব্দ; আমার তৃষ্ণা মেটে না।


সকাল বেলা ঘুম ভাঙ্গলে ভীষণ অবাক হই–
মাঠ-ঘাট, খাল-বিল জলে করছে যে থৈথৈ।


অঝোর ধারায় ঝরছে বৃষ্টি কালো মেঘ থেকে,
আঙ্গিনার উঠোনে হাঁটুজল, ডুবে গেছে উনুন,
মনে পড়ে গেল সারারাত ধরে টিনের চালায়
অঝোরে ঝরেছিল আষাঢ়— শ্রাবণের শিঞ্জন।


শুনি মুন্নার বাবা কাঁদছে দক্ষিণ দুয়ারে বসে–
জলে গিলে ফেলেছে তার ফসলের সব ভুঁই,
অদূরে বিষন্ন মনে বন্ধু রকিবুলের বৃদ্ধ বাবা–
পালিয়েছে পুস্করিণীর কাৎলা-মৃগেল, রুই।


টিভিতে চোখ রাখায় মনটা হলো আরো ভার,
নদী ভাঙনে মানুষের সহায়-সম্বল সব সাবাড়।


দক্ষিণে যারা নদী পাড়ের সহজ-সরল মানুষ
কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে রাতদিন কাঁদছে,
আবাসস্থল, গবাদিপশু-পাখিসহ কত-শত স্বপ্ন
আষাঢ়- শ্রাবণের সাথে অকূলে ভাসছে!


আত্মমগ্ন মানুষ আমি; সুখের রাজ্যে বসবাস,
মানুষের লাশ জলে ভাসে– শুনি নূপুরের শব্দ!
ছন্দ-উপমা আর রস-কষে সাজাই কথামালা,
ওদিকে ফিকে হয়ে কত জীবন-গল্প হয় স্তব্ধ!


কবে যে বিবেক আত্মমগ্নতাকে করবে আঘাত!
মনুষের জন্য সদয় মানুষ হতে করবে সজাগ?
----------------------------------------
১৩/০৭/২০২০🖋️