আমি নীলাকাশে পাখির মতো উড়তে চাই,
ছুটতে চাই বাগানে বাগানে প্রজাপতির মতো,
আমি শান্ত নদীর শীতল জলে স্নান সেরে–
গাছের তলে বসে ভুলতে চাই মনের ক্ষত।
বাঁশঝাড়ের ফাঁক দিয়ে চাঁদটা কেমন হাসে!
দেখতে চাই সেই দৃশ্য পুকুর ঘাটে বসে বসে।


অলস হয়ে বিলের জলে বড়শি নিয়ে রোজ
ধরতে চাই ছোট বড় হরেকরকমের মাছ,
বিকেল বেলা পাড়ার মাঠে খেলতে চাই বল–
খুঁজবে আমায় মা-জননী ফেলে সকল কাজ।
স্বাধীনতায় বাঁচতে চাই সুখে-দুঃখে, হেসে-খেলে
বাংলা আমার জন্মভূমি, আমি তার দুষ্টু ছেলে।


পাকিস্তানের মানুষ কেন করবে আমায় শাসন?
কেন তাদের দখলে গায়ের মেঠোপথ, ঘাট-মাঠ?
পাক-বাহিনীর বুটের শব্দে কাঁপবে কেন মাটি?
ওদের কথায় চলবে কেন অফিস, বাজার-হাট?
কেন তারা চালাবে গুলি বাপ-ভাইয়ের বুকে?
কোন সাহসে নেয় ওরা মা-বোনের সম্ভ্রম লুটে?


আদেশ করো মা; যুদ্ধে যাবো– যেতেই হবে যে,
বয়সের দোহাইয়ে লুকিয়ে রেখোনা আমাকে,
বাবার দরদ ভরা বুকে যারা গুলি করেছে,
নির্মমতায় অকালে করেছে বিধবা তোমাকে,
আমার বোনকে তুলে নিয়ে সম্ভ্রম লুট করেছে–
তাদের ধ্বংসে আজ শত মনে ঝংকার উঠেছে।


মরেছে ভাই, বোবা হয়ে  আছে আদরের বোন,
মাগো, অশ্রু মুছে পাষাণী কণ্ঠে করো আদেশ–
আমি বেঁচে না ফিরলেও; তুমি পাবে মুক্ত ভূখণ্ড,
তোমার আমার জন্মভূমি– সোনার বাংলাদেশ।
_______________________
১৫/১২/২০২০🖋️    
একটি বাংলাদেশ -১৬ থেকে ১৫


উৎসর্গঃ মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করা সকল কিশোর যোদ্ধার সম্মানে।