অনেক অনেক দিন– মৃত্যুর আগ পর্যন্ত
মনে থাকবে তোমার কথা; ঘরে ফিরে কত গল্প
করবো তোমায় নিয়ে, ছেলে-মেয়ে; নাতী-নাতনী
সব্বাইকে শোনাবো তোমার স্বভাবের গান,
স্রোতের নাচন, উজানভাটি–উদারতার কাহিনী।


যদিও তুমি প্রিয়তমা হতে পারো নি,
সমগ্র মন রাজ্য দখল করে রেখেছে আমার
বাড়ির পাশ দিয়ে চলা ছোট পাথরাজ নদীটা,
                 যার ভালোবাসার রসে প্লাবিত
শৈশব, কৈশোর এবং যৌবন আর
মৃত্যুটাও চাই তারই হাঁটুজলের শীতল কোলে।

দূর দেশে বসে স্বদেশের টানে বুকে যে ব্যথা!
যে বিষণ্ণতা হৃদয়কে কুচিকুচি করতো; তোমার
যৌবন ভরা বুকে তাকিয়ে ভুলে যেতাম সব,
ক্ষনিকের জন্য হলেও মনে শান্তি দিয়েছো–
                 এ যে অনেক অনেক পাওয়া।


তবে তোমারও অনেক কষ্ট–
মানুষগুলো তোমার বুকেই ভাসিয়ে চলে সুখে
কত্ত বড় বড় নৌকা, জাহাজ, লঞ্চ নিয়ে;
আবার তারাই ফেলে যায় কত আবর্জনা!
তোমার কোলে– তোমার স্বচ্ছতাকে করে দূষিত।
তবুও বুকটা প্রশস্ত করে রেখেছো জন্ম থেকে;
জোয়ার ভাটায় সব কষ্টকে পুষে রাখো নিরবে।


এভাবেই রহে-সহে ভালো থেকো; ওগো গোমতী,
নির্বোধ- স্বার্থপর  মানুষগুলোর অমঙ্গলে
                      কখনো গর্জন দিয়ে উঠো না।
এখানে আমার থাকার দিন শেষ; চললাম–
আমার প্রিয়তমা পাথরাজ নদীর কোলে, তবে
তোমার কথা ভুলে অকৃতজ্ঞ হবো না কোনদিনও,
যদি আর দেখা না হয় তোমার সাথে, তবুও।
_________________________
২৬/০৯/২০১৮🖋️      
বাউশিয়ার চর, গজারিয়া, মুন্সিগঞ্জ, ঢাকা।
  (দূর দ্যাশে বসে- ৭)