এখানে পায়ের গোড়ালি অবধি জলে–
বোরো ধানের চারা লাগানো ক্ষেতে
সাদা সাদা বক এসে নামত ঝাঁকে ঝাঁকে?


সবুজের আল ধরে কত ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে
ছুটতো ঘাস ফড়িং আর প্রজাপতির পিছে;
কখনো বা মন আটকে যেতো ছোট ছোট মাছে।


এখানে গাছের গোড়াকে শিল বানিয়ে–
বাহু জোড়ে ধান মাড়াই করতো কৃষাণ কৃষাণী,
চিড়া কুটার শব্দ ছিলো শৈশবের ঘুম ভাঙানি।


পিতলের ঘন্টা বাজিয়ে সাড়া দিত বাতাসা ওয়ালা,
টাকায় পাঁচটি আইসক্রিম পাওয়া যেত ফাল্গুনী দিনে
বাবার পকেট, মায়ের আঁচল কেটে নিতাম মুড়ি'র লাড্ডু কিনে।


শীতের বিকেলে খোলা মাঠে মিষ্টি রোদে পিঠ পুড়িয়ে
পাড়ার দাদি-নানিরা নকশিকাঁথায় চালাতো সুঁই-সুতা,
কত ভীড় দেখেছি! কেউ আনলে কিছু চুড়ি ফিতা।।


ডাঙ্গুলি খেলতে খেলতে কত ঢুকে পড়েছি অন্য পাড়ায়!
কুড়ানো পলিথিনে সযত্নে মোড়ানো জাম্বুরার মতো ফুটবল–
উঠোনে জমা হতো কতো নালিশ; অনেকের গাছে নেই ফল!


গোল্লাছুট আর কানামাছি— হারিয়ে গেছে রঙিন শৈশব,
নদীর পাড়'-এ ছোট ছোট গর্তে মাছ ধরতাম কত!
শিমুল গাছের মগডালে টিয়াপাখির ছানা, দু'হাতে কত ক্ষত!


আলু ঘরে নেওয়ার পর কৃষক যখন লাঙল চালাতো ক্ষেতে
লাঙলের পিছে ছুটতাম শত জন হাফপ্যান্ট পড়ে!
সবার কাঁধে পাটের ব্যাগ- কুড়ানো আলুতে যেত ভরে।


ভাসাইনগর গ্রামে, কালীমন্দিরের নিচে নিমাইচন্ডী জলাশয়,
কচুরিপানা, শিঙাড়া আর শিং মাছে ভরপুর-
পাড়ার সকলে যেদিন নামতো- না খেয়ে কাটতো দুপুর।


আরও কতো স্মৃতি কথা, দিন বদলের হাওয়ায় আজ–
সেসব যেন রূপকথার গল্পের মতো বানানো কল্প- কাহিনী!
তবুও দুর্দান্ত শৈশব জেগে উঠে; সুখের মাঝেও চোখের পানি।
------------------------------------------
২২/০১/২০২০🖋️