ঘরে আর ফেরা হলো না তার—
সময়ের খেলায় ঘড়িতে ঘন্টার কাঁটা
ছাড়িয়ে গেছে সকাল এগারোটা,
—তখনও দেখা নেই সূর্যি মামার।


আজকাল সূর্যি মামাও ভীষণ দুর্বল—
দিনের শুরুতে কুয়াশার বুক চিরে;
আলো ফেলতে পারেনা জমিনের উপরে,
প্রকৃতি রোজ দীর্ঘক্ষণ থাকে তার বে-দখল।


তাই বলে কি থেমে থাকে জীবনের খেলা!
খাদ্যের সন্ধানে নীড় ছেড়ে ছুটেছে সকল পাখি
গাছের ডালে ডালে বসে সঞ্চালনায় ব্যস্ত আঁখি,
নিয়মের টার্মিনালে জীবন- নিয়মমাফিক চলা।


সেদিনও তিনটি পাখি বসেছে মেহগনি গাছে,
গুলতি নিয়ে একজন তাক করে বারবার;
যতবার ব্যর্থ হয় তাক করে আবার; ততবার–
ব্যর্থতার গান নিয়ে সহাস্য আসে আমার কাছে।


নিছক মজা করে, গুলতি হাতে  তাক করি–
ছোট পাথরটা ছুটে গেল গুলতি থেকে,
আমরা চেয়ে আছি নিষ্পলক চোখে—
দুটো পাখি উড়ে গেল, একটি পড়ে গেল নিচে!
তাক লেগে যেতে পারে! ছিলো না বিশ্বাসে।
এ কী! আমি হলাম যে কোন প্রাণের হত্যাকারী।


না জানি কত স্বপ্ন কুড়িয়ে ফেরার স্বপ্ন নিয়ে–
হিমেল-কুয়াশার বুক চিরে এসেছে নীড় ছেড়ে;
আমার হাতে পাখিটার প্রাণপাখীটা গেল উড়ে!
আহ! এ অপরাধবোধ; রাতদিন চলে তাড়িয়ে।


না জানি পাখিটা নীড় থেকে বেরুনোর সময়;
অভুক্ত ছানা কিংবা অসুস্থ প্রিয়তমাকে
আসেনি তো 'ফিরে আসার অপেক্ষায়' রেখে!?
–এসেছিলো কি বিদায় নিয়ে; চিরবিদায়?


ঈশ্বর, ক্ষমা চা'বো কার কাছে? কখনো ভাবিনি
কোন প্রাণের অপমৃত্যু হতে পারে আমার দ্বারা!
কেন তা-ই ঘটে গেল! অনুশোচনায় দিশেহারা,
না জানি তার অপেক্ষায় নীড়ে কত ছটফটানি!


সে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায়; অনুশোচনার আগুনে
অন্তর যতই হোক দগ্ধ, যতই পুড়ুক হৃদয়-বাড়ী,
পারি না ক্ষমা করতে নিজেকে; আমি হত্যাকারী,
খুঁজি মুক্তি ও স্বস্তির পথ; আছে কোন বিধানে?
--------------------------------------------
১৩/০১/২০২০🖋️