দুনয়ন তার তারার মতন / চাঁদের মতন মুখ,
বয়স এমন– বছর আটেক,/ বোঝে না'তো সুখ দুঃখ।
কালো কালো চুল; গোল গাল মাথা/ দেহের গড়ন গোরা,
লিকলিকে দেহ; উজ্জল দাঁত/হেসে হেসে দিশে হারা।
পাড়ার বালক সবাই চাতক/ সবার সেরা সে; গুরু,
ক্লাস থ্রিতে পড়ে; ছয়খানা বই,/ লিখে টান করে দু'ভ্রু।
চনচনে রোদে পিঠখানি জ্বলে/ক্ষেতের আইল ধরে,
ছিপ নিয়ে হাঁটে, দিনমান ক্ষেতে/ ছোট-বড় মাছ মারে।
শোনে না বারণ–পুরো সিংপাড়া/ তার তরে জেগে রয়;
না জানি কখন চঞ্চল ছেলে/ কি যে করে বসে; হায়!


নাম সাব্বির, বাড়তি বয়স/ দুষ্টুমি সদা; করে–
থাকেনা বাড়িতে, ক্ষেত থেকে এসে/ বাবা মরে খোঁজ করে।
পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বেড়া তার/ নেশা-পেশা প্রিয় শখ,
খেলে মার্বেল, পুকুরে গোসল,/ ধরে ঘুঘু, টিয়া, বক।
কত যে ঘটনা ঘটায়; রটায়/ দুঃশ্চিন্তায় পিতা,
বকাবকি করে মমতাময়ী মা/ পুরু হয় স্মৃতি পাতা।
তবু সাব্বির সবার নয়নে/ নয়নের মণি সদা,
পুরো সিংপাড়া জুড়ে একজন/ অল্প বয়সে  জাদা!
একদিন তারে; না দেখলে ওরে/ যেন থেমে থাকে পাড়া,
সেই ছেলে আজ মেলা দিন ধরে/ বিছানাতে আধা মরা!


চাচার শ্বশুর বাড়ি; বাগ-হাটে/ একদা বেড়াতে যায়,
ফিরে আসবার কালে আচমকা/ পড়ে  দুর্ঘটনায়!
চন্দবিন্দু মোড়ের মাথায়/ বাইক উলটে পড়ে,
পেছনের দিক থেকে আসা অটো;/ চাপে দু'রানের 'পরে।
দু'রানের হাড় ভাঙ্গে সটান,/ ভা'য়ের মাথায় চোট!
অটো ড্রাইভার থামেনি তবুও/ –পালাচ্ছে করে লুট!
অচেনা মানুষে তুললো তাদের/ হাসপাতালেও নিলো,
সেই থেকে তার জীবন গল্প/ পুরোপুরি এলোমেলো।।


গরীব বাবার নেই অতো টাকা/যা দিয়ে তড়িৎ করে
হতে পারে তার উন্নত সেবা,/ হায়; হায়; করে মরে।
টাকার অভাবে পারেননি নিতে/ হাসপাতালের সেবা,
তাই বলে চুপ করে বসে থাকা!/ থাকে বসে কোন বাবা?
দুলাল নামের এক কবিরাজ/ বোদা হাটে যার বাড়ি,
ডাক্তারি সেবা ছেড়ে; নিয়ে যায়/ সেখানেই তাড়াতাড়ি।
কবিরাজ বেটা ভীষণ– মানুষ/ বোঝেন গরীব  ব্যথা,
সেখানেই চলে চিকিৎসা তার; সস্তায় সেবা সেথা।


সেদিন গেছিনু খোঁজ নিতে তার / তাকে দেখে হই সুখী,
দুলাল মামার চিকিৎসা নিয়ে/ সেরে উঠছে সে দুঃখী।
মাবুদের দ্বারে প্রার্থনা মোর,/ সকলেই দোয়া করি–
সাব্বির যেন ফের ছুটে মাঠে/ সেরে উঠে তাড়াতাড়ি।।
__________________________
১০/০৮/২০২২🖋️
মাত্রাবৃত্ত ছন্দঃ ৬+৬/৬+২
নোটঃ বাগ-হাট> বাগের হাট, চন্দবিন্দু>চন্দ্রবিন্দু,