হয়তো পড়তে পারতাম; ইতিহাস বুঝতাম না–
যুদ্ধের গল্প শুনতাম রোজ রাতে দাদুর মুখে,
কোন রাক্ষসপুরীর ভয়ংকর গল্পও তখন
এত ভয় জাগাতে পারতোনা কচি বুকে।
কুঁকড়ে থাকতাম দাদুর চাদরের ভেতর,
মন প্রাণ, সারা দেহ কাঁপতো থরথর।


বইয়ের ব্যাগটার ওজন বেড়ে গেল একসময়,
যত পড়ছি, যত জানছি বাংলাদেশের ইতিহাস-
পূর্বপুরুষদের সে কী করুণ জীবন বর্ণনা!
বুক ফেটে বেরিয়ে আসে কালো দীর্ঘশ্বাস।
অতঃপর দেয়ালে যখন ঠেকে গেল পিঠ!
স্বাধীন এবং মজবুত করবে অস্তিত্বের ভিত...।


শত অপবাদ, শত লাঞ্ছনা-গঞ্জনা, খুন-ধর্ষণ
আর শোষণ-নিপীড়নের দিতে কড়া জবাব,
আপামর বাঙালি জীবনের মায়া স্বপ্ন ভুলে,
'স্বাধীন দেশ' এর স্বপ্ন নিয়ে হাতে রাখে হাত।
ছিলনা সশস্ত্র প্রশিক্ষণ, ছিলনা অস্ত্রের মজুদ,
যুদ্ধে নেমেছে তবু, বুকে স্বাধীনতার বুঁদ বুঁদ।


সে কী বিভীষিকাময় সময়! সশস্ত্র যুদ্ধ মাঠে-
বাঙালী অস্ত্রহীন, বস্ত্রহীন, পেটেও নেই ভাত,
নদীর জলে রক্ত, মাঠে ঘাটে লাশ আর লাশ!
শত্রুপক্ষ, অস্ত্রে শস্ত্রে, ভয়ে প্রকম্পিত শান্ত রাত।
৭১'এর স্বাধীনতা যুদ্ধের কথা বলছি আজ,
যুদ্ধ করিনি, তবুও মাথায় স্বাধীনতার তাজ।


মুক্তির সংগ্রামে মৃত্যু পায়ে দলা একটি মানুষ,
যাঁর আহ্বানে ৭১'এ জেগে উঠেছিল বাঙালি,
নিজেদের কথা, নিজেদের মায়া ভুলে রাত দিন
'স্বাধীন বাংলাদেশ' আনতে নিজদের দিল বলি-
তুমি সেই মানুষ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,
যাঁর দীপ্তকণ্ঠে জেগেছিল মৃতপ্রায় কত প্রাণ!।


তুমি সেই মহামানব, বাঙালির প্রাণের পুরুষ—
বাঙালি ছেড়েছিল ঘর প্রিয় স্বাধীনতার নেশায়;
মনে দ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে মেতেছিল যুদ্ধে
বলো, কার বাণীতে? বলো, কার দীপ্ত কথায়?
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, তুমি এক মৃত্যুঞ্জয়ী বীর,
বিশ্ব-দ্বারে করে দিয়েছো উঁচু বাঙালীর নতশির।
-----------------------------------------
০৪/০২/২০২০🖋️                
উৎসর্গঃ বঙ্গবন্ধু, জন্ম শত বার্ষিকীতে (১৭/০৩/২০২০) তাঁর বিদেহী আত্মার মুক্তি কামনা করি।