রাজপথে অবারিত রক্তের স্রোতধারা, আমাকে বিহ্বল করে না,


আমি হতাশায়, শোকে নির্বাক-স্তব্ধ হই না ।


স্বজন হারানোর কান্না আমার কানে মাতম তোলে না,


আমার দু’চোখ বেয়ে অবিরাম নোনাজল গড়িয়ে পড়ে না ।


মাজলুমের আর্তনাদ, বঞ্চিত-নিপীড়িতের চিৎকার আমাকে স্পর্শ করে না,


ক্ষুধার যাতনা, বাঁচার আকুতি আমার হৃদয়ে নাড়া দেয় না ।


চোখে কোন স্বপ্ন নেই, বুকে কোন আশা নেই, নেই কোন মায়া-দয়া-টান ।


সর্বগ্রাসী শোষকের নির্মম শোষনে, আমি নিষ্ঠুর, কঠিন-পাষান ।



শাসকের লেলিয়ে দেয়া পোষা কুকুর সম হিংস্র বাহিনীর বুলেট-উৎসবে,


কত প্রান নিভে গেছে, কত অঙ্গ ঝরে গেছে, হয়েছে বিলীন এই ভূগর্ভে ।


আপনার পয়সায় লালিত লাঠিয়ালদের নির্দয় লাঠির আঘাতে,


রক্তাক্ত হৃদয় গগন কাঁপিয়ে রোল তোলে, অথৈ ব্যথার স্রোতে ।


শ্রমিক বোনে শিক্ষক জনে, ছাত্র-ভদ্র-সভ্য জনে নির্বিচারে লাঠির ব্যবহার,


দাবী আদায়ে রাজপথে নামা নিরস্ত্র জনগনে নির্মম সশস্ত্র অত্যাচার,


পলক ফেলিনি, তাকিয়ে দেখেছি ; বিচলিত হইনি, আমি যে পাষান তাই-


কোমলতা ভুলে কাঠিন্যেরে হৃদয়ে দিয়েছি ঠাঁই, নির্দ্বিধায় ।



ঐ ভোগী-মিথ্যাবাদীরা, বুক চিরে রক্ত ঝরিয়েছে ত্যাগী-সত্যবাদী হতে-


আমি কঠিন চোখে দেখেছি সেসব ; স্থির, নিশ্চল, অকম্পিত চিত্তে ।


কারাগারের নিপীড়ন ঘরে মাজলুমের আর্ত-চিৎকারে বদ্ধ দেয়ালের দীর্ঘশ্বাস,


অবিচার প্রদানে স্বাধিকার হরনে অত্যাচারীর অন্যায্য অভিলাষ,


ক্ষমতার দ্বন্ধে নোংরা-নগ্ন খেলায়, রক্তিম করে তোলা রাজপথ-


অত্যাচারীর অন্যায় আবদার পূরণে দাবিয়ে রাখা যত ভিন্নমত,


আমি পাথর চেপে বুকে সয়েছি সেসব ; অক্ষম মম-প্রান,


কান্না ভুলে চোয়াল শক্ত করেছি, হয়েছি নির্দয় পাষান ।



চোখে আমার প্রতিশোধ-স্পৃহা, বুকে রোষের আগুন, মুষ্ঠি করে সদা নিশপিশ-


জালিমের হুংকারে ক্রোধে কেঁপে উঠি আমি, অহর্নিশ ।


ভক্ষকের ভুমিকায় রক্ষক, পোষা কুকুর সাজে সেবকেরা-


লংগিত করে পদদলিত করেছে তাঁরা, মানবধিকারের যত ধারা ।


জালিমের পোষা কুকুরদের পুড়িয়ে মারতে, চোখে ধারন করি চৈত্রের খরতপ্ত রোদ


অত্যাচারী শাসক গোষ্ঠীর জন্য বুকে লালন করি, প্রতিশোধ, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ।


অন্যায় আস্ফালনকারীদের রক্তাক্ত দেহ, আর্তনাদ-চিৎকার আমাতে প্রভাব ফেলে না-


পাষান হৃদয়ে বরাদ্দ রেখেছি তাদের জন্য, অভিশাপ আর ঘৃনা ।




২৬/১১/২০১৩ – ইং ।




________######________