আমি নারী,
আমি বিবি হাওয়া,
আমার গর্ভে তোমাদের জন্ম;
এক আদম ছাড়া।
আমি কখনো মাতা, কন্যা, ভগ্নী;
কখনো বা প্রেয়সী, স্ত্রী।
একই অঙ্গে এতরূপ।


আমি মমতাময়ী মা,
নিজেকে বিলিয়ে সন্তানের মাঝে বাঁচে থাকি।
আমি সোহাগি প্রিয়তমা অর্ধাঙ্গিনী,
প্রেম দিয়ে জগৎকে আনন্দময়ী করি।
আমি আদরের ভগ্নি কন্যা;
তোমাদের চক্ষু শীতলকারি।
আমি তোমাদের সুখ দুঃখের বিশ্বস্ত সাথি।


হাসি মুখে তোমাদের পাশে থাকি,
নিজে না খেয়ে তোমাদের খাওয়াই,
মাছের মাথাটা নিজের পাতে নেই না কখনো,
শুকনো জায়গায় তোমাদের দিয়ে ভেজা জায়গায় শুই।
বাবার কর্কশ শাসন থেকে রক্ষা করি,
অসুস্থ হলে সারারাত জেগে থাকি,
চোখের পাতা এক হয় না; আমি যে দরদি নারী!


তোমাদের ছুটি আছে, আমার নাই।
উদয়াস্ত পরিশ্রম করি যদিও দিন শেষে উপমা পাই,
"সারাদিন তুমি কি করো?"
তোমাদের অবসর আছে, পেনশন আছে, আমার নেই।
পিতার সেবা, স্বামীর সেবা;
সন্তান লালনপালন, নাতিনাতনির দেখাশোনা;
অবসর দিলে কখন?


বাপের বাড়ি ছেড়ে নতুন পরিবেশে আসি,
পরকে আপন করি, আপনকে করি পর।
এটাই আমাদের নিয়তি, হাসি মুখে মেনে নেই;
যদিও তোমরা অনেকে তা বোঝনা।
কেউ কেউ আমাদের দায়গ্রস্ত মন করো।
নাহলে "কন্যাদায়গ্রস্ত" শব্দটি এলো কি করে?
"পুত্রদায়গ্রস্ত" শব্দটি অভিধানে নেই কেনো?


কতো অবিচার করো তোমরা-
যৌতুক চাও, আঘাত করো;
ধর্ষণ করো, নির্যাতন করো;
এসিড নিক্ষেপ করো, ইভ টিজিং করো।
আবার "নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস" পালন করো।
তোমাাদেরও "একই অঙ্গে কতরূপ?"


আমার চোখে গোটা জাতির স্বপ্ন,
আমার স্তন্যে শিশুর পিপাসা মিটে, ক্ষুন্নিবৃত্তি হয়।
আমার বুকে সন্তনা স্বামী আগলে রাখি,
আমার গর্ভে তোমার দশ মাস দশ দিন বসবাস,
আমার কোমল কোলে তোমার বেড়ে উঠা,
আমার পদতলে তোমার পরকাল, ভবিষ্যত-
তবে, আমাকে কেনো অস্বীকার করবে তোমরা?



মালি (আফ্রিকা)
ইউএন শান্তি মিিশন
০৫/০২/২০১৭ খ্রিঃ।