বন্ধুরা, এইমাত্র আত্মহত্যা করলাম,
বিষের শিশিটা মেঝেতেই রাখলাম।
কণ্ঠনালি হয়ে পাকস্থলী নাভি পর্যন্ত,
জ্বলে পুড়ে ছারখার খাচ্ছি খাবি অন্ত্য।
একটু পরে ছেড়ে যাবো মায়াময় এই পৃথিবী,
নিস্তেজ হয়ে যাবে আমার সতেজ দেহ খানি।


দৌড়ে এসে মা বুকে জাপটে ধরে,
"বল বাপ, তুই যাচ্ছিস কেন মরে?
দশ মাস দশ দিন গর্ভে রেখেছি তোকে,
মরেছি আমি ছয়দিন প্রসব বেদনার শোকে।
ছয়মাস শুধু তোকে বুকের দুধ খাইয়েছি,
এর মধ্যে একরাত ও না আমি ঘুমিয়েছি।"


"এতো বড় করেছি তোকে ভালবাসা দিয়ে,
চলে যাবি তুই, আমাকে সঙ্গে না নিয়ে?"
ক্ষণ পরে রাশভারী বাবাও আসেন পাশে,
ছোট বাচ্চার মতো হাউমাউ কাঁদে হাসে।
মরণকালে অবাক হয়ে দেখি আমি তাঁকে,
পৃথিবীর শক্ত মানুষটাও কান্না এতো হাঁকে!


দেহ খানা মোর অবশ হয়ে আসছে ধীরে ধীরে,
তাদের দেখে বাচঁতে আমার ভীষণ ইচ্ছে করে।
আস্তে আস্তে নিশ্বাসখানা ছোট হয়ে আসতেছে,
চোখ ঘোলা হয়ে মস্ত পৃথিবীটা আবছা হয়ে গেছে।


মনে মনে নিজেকে খুব অপরাধী ভাবতে লাগলাম,
সর্বোচ্চ ভালবাসার কাছে আমি যে হেরে গেলাম?
দু'আনার বালিকার জন্যে আমি একি করলাম,
বিনা রণে জীবন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে ভাগলাম।


বন্ধু, আত্মহত্যা করিনি শিশিটা এখনো হাতে,
আত্মহত্যার পরে কি হবে ভাবছি তা মনে মনে।
চোখ বন্ধ করে অনুভব করলাম আমি এতোক্ষণ,
আত্মহত্যা আর কখনো নয় করলাম আমি পণ।
অকৃতজ্ঞের জন্য কভু আত্মহত্যা করোনা শোনো,
মরে যাবো আমি, সেতো ব্যাথা পাবে না কখনো!


সন্তান হারানোর ব্যথা জন্মদাতা দাত্রী বুঝে,
সারা জীবন যাবে তারা তোমায় খুঁজে খুঁজে।
ব্যথা পাবে মাতা পিতা আর তো কেউ নয়,
বন্ধুরা ভাবো তোমরা আর আত্মহত্যা নয়।
পাপের বোঝা নিয়ে যেওনা অন্ধকার কবরে,
"আত্মহত্যা মহাপাপ" জেনে রাখো ভাই সকলে।



জাতিসংঘ শান্তি মিশন
কমান্ডার, মালি
১৮/০৩/২০১৭ খ্রিঃ।