হে জীবন;
তোমার জন্যই প্রকৃতির এত আপ্যায়ন;
তোমার জন্যেই আমরা প্রয়োগ করি ক্ষমতায়ন;
শুধু তোমারই জন্যে হৃদয়ে আবির্ভূত হয় প্রলোভন।


জানি তোমার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত সময়;
তোমার জন্যই আমদের দৌড় নানা দিকময়;
তোমার জন্যে নানা কাজ করে ফেলি মনে রেখে নির্ভয়;
শুধু তোমারই জন্যে আমরা হয়ে পড়ি আবেগময়।


তুমি হয়েছো যখন শুরু,
শেষ তো তোমার হবেই সে কথা চিন্তা করে আমরা প্রত্যেকেই হয়ে যাই ভীরু;
তোমাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে আমাদের পদচারণ এখন মেরু থেকে মরু;
শুধু তোমাকেই টিকিয়ে রাখার জন্যে আমরা প্রত্যেকেই হয়ে পড়েছি মহাসাগরের এক-একজন সাঁতারু।


তোমার ব্যাপ্তি তো এই স্বল্প সময়ের;
অবসান হলে কে চিনে কাহাদের;
তোমার দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির জন্যে মোল্লা সাহেব গুণগান গাইছেন আল্লাহের;
আর পুরোহিত মশাই আর্চনা করছেন ভগবানের।


তোমার কারনেই আমরা স্বীকার হই নানা সমস্যার;
তোমার কারনেই আমরা দৃষ্টিগোচর হই অমাবস্যার;
তুমি আছো বলেই আমরা সন্মানিত হই দীক্ষার;
আবার তোমার কারনেই আমরা হয়ে পড়ি নির্বিকার।


শুধু তোমাকেই সচল রাখার জন্যে খেতে হয় খাবার;
তোমাকে আনন্দঘন পরিবেশে রাখার জন্য সৃষ্টি হয় পরিবার;
তোমার কারনেই সন্তানের চিন্তা হৃদয়ে গেঁথে থাকে মা-বাবার;
আবার তোমার জন্যই কোনো কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা চেষ্টা করা হয় বারংবার।


তোমার কারনেই ক্ষুধার্ত শিশু কাঁদে তার মায়ের কোলে;
তোমার কারনেই ব্যাক্তি কোনো কাজ করতে গিয়ে মনে আওয়াজ পায় ‘কে কি বলে?’;
তোমার কারনেই বক মৎস্য খায় গিলে;
তোমার কারনেই পরীক্ষার্থীদের চোখ পরস্পরের খাতায় পদচারণ করে পরীক্ষার হলে।


তোমার উপর অতিষ্ঠ হয়ে লিখ্‌ছি তোমার বিরুদ্ধে;
তোমার কারনে অসম্ভব কাজ ও চলে আসে অনেকের সাধ্যে;
তোমার কারনে শিশু বড় হয় মা-বাবার সান্নিধ্যে;
তোমার কারনেই অনেক কিছু মেনে নিতে হয় যখন বয়স চলে আসে বৃদ্ধে।


তোমায় নিয়ে লিখ্‌তে থাকলে শেষ হবে না আমার কল্পনার পাতা;
তোমার কথা চিন্তা করতে থাকলে মায়ের বুনা শেষ হতো না সেই শীতের কাঁথা;
তুমি যে আছো আমাদের অন্তরের মধ্যে গভীরভাবে গাঁথা;
তার ভালো-খারাপ মানবসকল চিন্তা করলে হৃদয়ে পায় প্রচণ্ড রকমের ব্যাথা।


তাই জীবন;
অপেক্ষায় আছি বাস্তবায়নের কিছু সোনালী স্বপ্নের ভবন;
এত সহজে চক্ষু নিভিয়ে আমি দেখবো না আর কোনো প্রকার স্বপন;
এই ভাবনা নিয়ে আমি ইতি টানছি এই কবিতার আর বলে রাখ্‌ছি, এই হচ্ছে আমার পণ।