হে কবিতা,তুমি আজ ঘুমাও
মায়ের আঁচলে ঢাকা কচি শিশুর মতো
প্রেমের নেশায় আর কাছে ডেকোনা-
হত- দরিদ্র অসহায় মানুষের কথা শোনতে।
কি লাভ বলো,ওদের গল্প শোনে
পারবে কি একমুঠো ভাত ক্ষুধার্ত
মানুষের মুখে দিতে?
হে কবিতা,তুমি আজ ঘুমাও
আমায় আর কাছে ডেকোনা
লাঞ্ছিত বঞ্চিত ধর্ষিত ও শোষিতের বেদনা জানতে।
নিষ্ঠুরতার বেড়াজালে আজ আমি বন্দি
বড় অসহায়, এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে।
হে কবিতা,তুমি আজ ঘুমাও
প্রণয়ের সুরে আর বাঁশি বাজিওনা
আজ আমি স্তব্ধ,বাকরুদ্ধ এক ব্যর্থপ্রেমিক,
শোকার্ত মানুষের কান্নায় কিছুই শোনতে পাইনা।
এ আমার ব্যর্থতা,পারলে ক্ষমা করো কবিতা,ক্ষমা করো--
হে কবিতা,তুমি আজ ঘুমাও
মায়ার পৃথিবীতে মানবতার সেতুবন্ধন আজ চূর্ণ-বিচূর্ণ
পশুর রাজত্ব প্রেমহীন এই রঙ্গশালা।
সত্য বিবেকের পদযাত্রা গোপন নির্বাসনে
কেউ কারো নয়,যেন শৃঙ্খলাহীন সমাজ,
আমি বড্ড একা,বড় অসহায় কি করবো বলো?
হে কবিতা,তুমি আজ ঘুমাও
ভাবুক হৃদয় আজ মৃত্যুপুরী-শশ্মানঘাট।
সভ্যতার স্মৃতিচিহ্ন আজ বড্ড হুমকির মুখে,
সর্বনাশী 'করোনা'মানুষের প্রাণ কেঁড়ে নিচ্ছে-
প্রতিকারের কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছেনা মানুষ,
মনে হয়,এই বুঝি মহা প্রলয়ের শেষ ঘন্টা বাজলো।
বিধাতাও লাখো-কোটি জনতার প্রার্থনা কবুল করছেনা,হয়তো।
মুত্যর মিছিল, আমায় তাড়িয়ে বেড়ায়,
কিছুই করার নেই কারো পক্ষে ,স্রষ্টাবিনে।
হে কবিতা,তুমি আজ ঘুমাও
তোমার ছন্দ তাল লয় ও গল্প নিয়ে--
বেদনার কালি আমি কলমে ভরে রাখবো,
সাদা কাগজে আর কিছুই লিখবোনা--
এ আমার বড্ড অভিমান।
হে কবিতা,তুমি আজ ঘুমাও
মিনতি করে আমায় আর নিরালে কাছে ডেকোনা।
সাবধান!আমায় স্পর্শ করতে এসোনা,
দূরে থেকো ভালো থেকো।
তোমায় যে আমি খুব ভালোবাসি,খুব--
হে কবিতা, তুমি আজ ঘুমাও
আমি নির্বাসনে যাবো,প্রভূর দরবারে কথা বলতে।
মানব মুক্তির ফয়সালা চেয়ে নেবো নির্জনে,
নতশিরে ক্ষমা চাইবো অতীত ভুলের জন্য,
তিনি অবশ্যই ক্ষমা করবেন।
কারণ,ক্ষমা করাই তাঁর কাজ,
একটু ধৈর্য্য ধরো শান্তি আসবে।
হে কবিতা,তুমি আজ ঘুমাও
বিরক্ত করোনা,মানুষকে বাঁচাতে দাও।
তুমি কেন বুঝনা, মানুষও যে কবিতার অংশ।
ধৈর্য্য ধরো সুসংবাদ পাবে,মৃত্যুর মিছিল থেমে যাবে।
মানব প্রেমে আবার তোমায় জাগিয়ে তুলবো।
কল্পনার জাল বুনে,নিঁখুত শব্দ,ছন্দের আলিঙ্গনে তোমাকে সাজাবো আবার এই বঙ্গে।
জয় হবে সত্যের,জয় হবে মানবতার,
জয় হবে আমার প্রিয় কবিতার।
            (১৮/০৪/২০ইং)