বুকটা যে মোর ব্যথায় ভরা কষ্টে ভরা মন,
ক্ষণে ক্ষণে মোর হারিয়ে গেল কত প্রিয় জন।
সেদিন বয়স মাত্র চার, বোঝার বয়স তো নয়,
সবার চেখে অশ্রু দেখে, মন যে জ্বালাময়।
ভেতরে জ্বালা বেড়েই চলে দাদা কোথাও নেই,
শূন্য বিছানায় কেঁদে কেঁদে হারিয়ে ফেলি খেই।
কত যে প্রহর গুনছি আমি সেদিনের পরে হায়,
কোথায় গেলে দাদাকে পাব বলে দাও আমায়।
বছর না যেতে যেতেই বুড়ো মা'র হলো কিযে,
কোথায় আবার হারিয়ে গেল শুধাই একা নিজে।
একাএকা ঝিমুতাম বসে আসবে কি তারা কভু?
সবার দিকে তাকিয়ে সদাই তাদের খুঁজি তবু।
তাদের নিয়ে ভাবতে ভাবতে বছর তিনেক পার,
জীবনে আবার নেমে আসিল ঘোর অন্ধকার।
বসেছিলাম ক্লাসরুমে সহপাঠীদের সাথে
বাবাকে নিয়ে খবর পেলাম হটাৎ দুপুর প্রাতে।
সেই যে বাবা অসুস্থ হলো সেদিনের পরে আর,
বিছানায় সে রইলো পড়ে, মৃত্যু আসিল তার।
সেদিন বুঝেছি চোখে জল আর যন্ত্রনা সে কিসে?
বাবা ছাড়া যেন শূন্য সবই, হারিয়ে ফেলি দিশে।
কত কেঁদেছি দুচোখ ভাসায়ে ফিরে আসতো যদি,
বক্ষে যেন বয়ে গেছে মোর বিশাল দুঃখের নদী।
সব আশা, সব স্বপ্নগুলো মাটিতে মিশায়ে হায়,
আমাকে ছেড়ে আছেন তিনি নিঝুম নিরালায়।
কিছু দিন না যেতে যেতেই অভাবের হানা দ্বারে,
অর্ধহারে দিন কেটে যায়, কখনো বা অনাহারে।
স্বজনরা আর কতকাল দিবে, সাধ্য আছে কার?
মায়ের চোখের জল দেখেছি, দেখেছি হাহাকার।
আরো দেখেছি অনাথ কি হে এতিম কারে কয়?
আমিতো দেখছি বাকরুদ্ধ মায়ের অশ্রু কথা কয়।
সামান্য ডাল ভাতের জন্য না খেয়ে কেঁদেছি কত,
দুমুঠো ভাত মুখে তুলে দিতে মা চেষ্টা করিত শত।
শুনেছি কত নামাজে দাঁড়িয়ে খেদার কাছে কয়,
আমাদের তুমি ধৈর্য দাও প্রভু, তুমি যে দয়াময়।
কত স্বজন, বন্ধু এসে, বুঝালে মোরে ঠিক,
নিঃশ্ব বুকে কষ্টে ধুঁকে ,পাইনা খুঁজে দিক।
আর কত যে বলব আমি আজ এখানেই থাক
সবাই যেন সুখেই থাকে, দুঃখ দূর হয়ে যাক।
আসলে ভবে যেতে হবে এই পৃথিবী ছেড়ে
তবুও খোদা নিও না তুমি অবুঝের পিতা কেড়ে।
সুখের গল্প সবাই শোনে দুঃখের গুলো নয়,
দুঃখের গল্পেরা বড় কঠিন শুনতে বিষাদময়।