*** আকাশ কন্যা ***


---- তন্ময় দে বিশ্বাস ----


ধানের শীষে মেঘ ছুঁয়েছে যেথা-
পূবের পথে একপা দুপা গিয়ে,
তাকিয়ে দেখি মেঘবালিকা হয়ে
আসছে ছুটে এ কোন গাঁয়ের মেয়ে !


আঁচল খানা জড়িয়ে কোমর ঘিরে
টেনে তোলা খেটো শাড়ির পাড়-
আসছে ছুটে টগবগিয়ে ধেয়ে-
সামনে সকল তুচ্ছ অহংকার,


শুধাই তারে- এই মেয়েটা, কোথায় থাকিস
দস‍্যি, পাজি, খুবতো বদের ধারী !
খিলখিলিয়ে বললো উঠে মেয়ে-
জানো ? আমি আকাশ ছুঁতে পারি !


দেখবে ? বলে হাতদুখানা তুলে
বনবনিয়ে চরকিপাকে ঘোরে
আকাশটা তার হাতের মুঠোয় একি!
তার সাথে মেঘ সত্যি খেলা করে !


খেলরে মেয়ে মেঘের সাথে খেলা-
আকাশ জুড়ে জয়ের আসন পাত-
তুই জগতের সৃষ্টি প্রলয় জুড়ে-
আদি থেকে অনাদি সংঘাত,


বলে উঠি - এই মেয়েটা থামতো এবার-
একলা ঘুরিস, কোনখানে তোর বাড়ি ?
অবাক করে বললো মেয়ে হেসে-
জানো ? আমি বৃষ্টি হতে পারি !


এইনা বলে, এলোকেশী মেয়ে
দোলায় মাথা সামনে পিছন ঘিরে
ধানের শিষের ডগায় জমা শিশির
চুলের ঘায়ে বৃষ্টি হয়ে ঝরে-


ঝররে মেয়ে বৃষ্টি ফোঁটা হয়ে
স্নিগ্ধ শীতল করকা বাদল হেনে-
কান্নাতে তোর আকাশ টলোমলো
তোর আবাহন নবান্নে পার্বণে,


কাটলো অনেক সময়, বলি- এবার আসি-
দুইজনাতে একটু ছাড়াছাড়ি-
হঠাৎ কেমন চেঁচিয়ে ওঠে মেয়ে -
দেখো, কেমন দুর্গা হতে পারি !


কোমর থেকে আঁচল খানা খুলে
বনবনিয়ে ঘুরলো দু চার পাক-
রক্তাভ গাল রক্ত বরণ চোখ
বিভঙ্গে তার অসুর নিধন ডাক,


এলোকেশী হাওয়ায় জটাজুট
ললাট রেখায় মাতৃ কলেবর,
মূদ্রাতে তার ত্রিশূলপানি রূপ
মাভৈ মাভৈ বজ্রনিনাদ স্বর,


থাক মেয়ে তুই দুর্গা কালী হয়ে,
দেবী রূপেই আসন যে তোর পাতা
বাঁচবি নিজে বাঁচাবি সব জনে
তুই জগতের সবার পরিত্রাতা ।।