*** খোয়াই এর খাম ***


----- তন্ময় দে বিশ্বাস ----


ও রবিঠাকুর, তুমি কিমন আছো গো ? কত্তদিন হৈয়ে গেল তুমি চৈলে গেছ, একবার টিও তো আমাদের খোঁজ টুকুও নিলেক নাই। আমরা বেঁইচে আছি না মৈরে গেছি সেটুকখান খব্বর তো রাইখতে পাইরতে। সক্কালে তোমার ঐ ছ‍্যাতলাপড়া বুক অবদি মুর্তিখান তো কেলাবের ছেলেগুলান সারফো সোডা লাগাইয়ে ছোবড়া দিয়ে ঘৈসে ঘৈসে চকচকে কৈরে ফেইললো। তোমার দাড়িগুলান দাঁত মাজা বেরাশ দিয়ে রৈগরে রৈগরে পোস্কার কৈরে দিলো। আমাদের বিশু কামারের নাতি আজ নেতা হৈছে গো ! সাদ্দা ইস্তিরি করা পাঞ্জাবি পৈরে তোমার গলায়  রজনীগন্ধার মালা পরাইয়ে তার কত্যো ভাসন, যেন তুমাকে হতে দেখিছে, তুমার সঙ্গে বসে তামাক খাইছে। পরান খুড়োর মেইয়ের ঘরের মাইয়া টা মাথ্থায় ফুল গ়ুইজে, গাছকোমর মেইরে একখান ছাপা শাড়ি পৈরৈ ঘুইরে ঘুইরে কোমর বাঁকাইয়ে বাঁকাইয়ে হাত ঘুরাইয়ে ঘুরাইয়ে কত্ত নাইচলে। মাইকে সক্কাল থেইকে তুমার গান বাইজছে। আচ্চা দাড়িবুড়ো, তুমি কাউকে কিছু বরবেক লাই? কত্তোজন তুমার গান গেইয়ে, তুমার ছবি বেইচচে, তুমার বই বেইচচে কত্ত টাকা কামাই নিলো। তুমার শান্তিনিকেতনে আজ জমির দাম কুথায় উঠিছে জানো? আর কুনো খাল ডোবা পুকুর কিচ্ছু নাই গো। সব ভরাট কৈরে লাক লাক টাকায় বেইচে দিচ্চে। হ‍্যাঁ গো ঠাকুর, এক লাকে কটা শূন্য থাকে গো ? দশ বারোটা হৈবেক ? তুমার নাম কৈরে কত্তো হোটেলে, রাস্তা ঘাট বানাইচে। তুমি উদেরকে ছেইরে দিবেক? তুমার নাম ভাঙাইছে, তার কমিশন লিবেক লাই? ইখন তো কমিশনের যুগ। সবেতেই কমিশন। জনমজুর, কুলিকামিন, মুনিশ খাইটতে গেলেও যে কনটাকটর কে কমিশন দিতে হয়গো। আর তুমি কিছু পাবেক লাই? সিটা কি হয় ? তুমি একবার টি এস্সো। ব‍্যাটাগুলানকে একটু তড়পে দিয়ে যাও, কান মুইল্লে তুমার কমিশন টুকু আদায় করো। সিটা ভিদিয়া, গুসকরা, পারুই, পুরন্দরপুরের হাড়হাভাতে গরীব গুর্বো আদিবাসী গুলানকে দাও গো ঠাকুর। উরা বড্ডো কষ্টে আছে গো। ভদ্দরলোক বড়লোক গুলান উদের সব কেড়ে লিইছে। সি বন লাই, সি নদী লাই, সি লালমাটির পথ লাই। উদের বাঁচাও গো ঠাকুর, উদের বাঁচাও।