*** মন্দ ছেলের উপাখ্যান ***
                                      
           তন্ময় দে বিশ্বাস


কাকলি তুই পারিস বটে - গড় করি তোর পায়,
তোর পেছনে ঘুরছি আমি , বছর দশেক প্রায় -
প্রথম যখন আলাপ হোলো সবে তখন তুই বারো
আমিও তখন উঠতি বয়েস সতেরো কি আঠেরো
তুই তখন সিক্সে পড়িস, আমি বারো ক্লাস -
সরস্বতী পূজোর ভোরে - ফেব্রুয়ারী মাস,
পরনে সেদিন হলুদ শাড়ী, বিনুনিতে লাল ফিতে,
তোর জন্যে ভোরবেলাতে কনকনে ঐ শীতে -
স্কুলের গেটে ঠায় দাঁড়িয়ে পায়ে ধরে ঝিনঝিনি,
এমন ভাবে দর বাড়াবি কক্ষনো ভাবিনি ,
অবশেষে দেখা দিলি ঠোঁটের কোনে হাসি -
আমার মনে উঠলো বেজে মদন কালার বাঁশী,
পরের বছর তোদের ক্লাবের ব্লাড ডোনেশন হলে -
দুবার আমি রক্ত দিলাম- শুধু তোকে দেখবো বলে,
পাশের বাড়ির মেনকা মাসির ওলাওঠা হোলো
ওর বাড়িতে রইলাম আমি দিন পনেরো ষোলো
বললো সবাই, যাসনারে ভাই খুব ছোঁয়াচে রোগ
বল্লাম আমি যাবোই যাবো, যা হবে তা হোক,
মেনকা মাসির উঠোন থেকে দেখা যায় তোর জানলা
তোকে দেখতে কি রিস্ক নিলাম- কি বলবি রে পাগলা
সেদিন যেদিন স্ট্রাইক হোলো তোর ফাইনাল এক্সাম
সাইকেলেতে তোকে নিয়ে বনবনিয়ে ছুটলাম,
আমার নাকে আসছিলো তোর গন্ধচুলের বাস
কষ্ট ভুলে নিলাম বারবার বুকভরে সেই শ্বাস
একদিন এক সন্ধ‍্যেবেলা তোর ,চোখে পড়লো পোকা
রুমাল দিয়ে বের করতে-সেদিন ই অতো কাছে
দেখা
কি চকচকে গালদুটো আর ঠোঁটদুটো টকটকে
আমি কিন্তু সুযোগ পেয়েও টাচ করিনি তোকে
অন্য যেকেউ এমন সুযোগে করতোই তো কিছু
আমি কিন্তু অন্যরকম - মনটা আমার উঁচু
বাড়ীতে জল তেষ্টা পেলে মা মা বলে ডাকি
তুই কি আমায় ভাবিস তোর বেক এ্যন্ড কল নাকি?
কেমিস্ট্রিতে অনার্স করে দোরে দোরে ঘুরি
চাকরি পাইনি, ঘরে ঘরে টিউশনি তাই করি
ঘুষ দিইনি ,তাই বেকার আজও,নেই জীবনের ছন্দ
সবাই আমায় আঙুল তোলে - আমি ছেলে মন্দ
ভাবছি এবার বর্ডার যাবো - হবো মিলিটারী
আমার জন্যে একটু কাঁদিস- যুদ্ধে যদি মরি,
আমাদের মতো মন্দ ছেলের বেঁচে থাকাই দায় -
তোর পেছনে ঘুরছি আমি বছর দশেক প্রায় ।।