অনিরুদ্ধ : বেশি জানলে উল্টে যাবার সম্ভাবনা খুব বেশি,
তা জানো তো?
রেবতী : খুব বেশি না জানাই বোধ হয় ভালো তবে।
তাই তো মনে হয়।
অনিরুদ্ধ: এভাবে জানাটা রীতিমতো অযৌক্তিক।
প্রায় অসম্ভব বললেও চলে।
যদি জানতেই হয়, জানবে পুরোপুরি।  
যাতে সঙ্গত,অসঙ্গত বুঝতে পারো,
উভয়ার্থেই।
রেবতী: জানছি সকলই ধীরে ধীরে।  
তোমাকে জানছি ,
জানছি তোমার যুক্তি, তর্ক,গপ্পো।  


(নিঃশেষিত চায়ের কাপে তলানী পড়ে থাকে।
পড়ে থাকে উচ্চারিত শব্দের উচ্চারণের রেশ।)


অনিরুদ্ধ: আমার কথা প্রায় শেষ।  
এখন তোমার কথা বলে ফেলবার সময়।
অকপটে, অসংকোচে।
রেবতী : তোমার কথা প্রায় মিলে যাচ্ছে।
হ্যাঁ , একদম মিলে যাচ্ছে ঠিক ঠিক।
অনিরুদ্ধ : তাই? ঠিক কিসের সাথে মিলে যাচ্ছে ,
একটু খোলাসা করে বলতে পারো?
রেবতী : পাগলের ডাক্তাররাও
একই কথা বলে থাকেন সব রোগীকেই।
একদম।
অনিরুদ্ধ :ধুর! কিসের সাথে কি !
তুমি এতো সংশয়ে ভোগো কেন?
সব কিছুই আলুর দমে দম নেয়না, জানো তো?
রেবতী :জানি জানি।
কিছু কিছু দমদম এয়ার পোর্টেও পৌঁছে,তাই তো?
আর উড়িয়ে নিয়ে যায় বিহঙ্গ সাধনায় , অনিবার।
অনিরুদ্ধ : বাহ্ ! বেশ গোছানো তো কথাখানি !
তোমার নিজের কথা তো?
রেবতী : ঠিক কি মনে হয় তোমার ?
খোলাসা করে তুমিও নাহয় বললে এবার?


গতকাল অনিরুদ্ধ তার শেষ চিঠিটি পোস্ট করেছে।
তার চিঠিগুলি অবিশ্বাস্য রকমের সুন্দর হয়,
ঠিক যেন স্বপ্নের মতন।
ঘাতকব্যধি ক্যান্সার এ ক্ষয়ে যাওয়া তার শরীর।
সে ফিরে যাচ্ছে, আবার।
শেষ কথাটি ছিল, ঠিক এরকম।  
শতবার পড়বার পরেও রেবতীর মনে হলো ,
ঠিক এইরকমই !


"এক জীবনে মানুষ ঠিক ক'বার মরে,
তুমি আমি হয়তো সঠিক জানিনা।
হয়তো একদিন
বিধাতার উত্তর পেয়ে যাবো ঠিক ঠিক।
বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর।"  


(নিঃশেষিত চায়ের কাপে তলানী পড়ে থাকে।
পড়ে থাকে উচ্চারিত শব্দের উচ্চারণের রেশ।)