হয়তো এমনই এক আলসে বিকালে
গিয়ে বসতাম সেই নদীটির ধারে,
আমার ছোট্ট কটেজটার পাশে
এক চিলতে উঠোনটার ওপারে,
সেসময় যেটা ছেয়ে থাকত লাল ম্যাপল পাতায়,
যেতাম উঠোনটা পেরিয়ে পাতাগুলোকে মাড়িয়ে
কিন্তু একটুও কষ্ট না দিয়ে
ওপারে নদীতে তখন কল কল শব্দ,
রূপোলী মাছের ঝলকানি!
আমি তখন নদীর পাশে বসে
সেই শব্দ শুনতাম,
‘সে’-ও হয়ত আমার পাশে এসে বসত
আমার কাঁধে মাথা রেখে
চুলগুলো বুকের উপর এলিয়ে,
আমরা শুনতাম নদীর সেই কল-কল শব্দ
আর এক হয়ে যেতাম
নদীর সাথে,
আমরা শুনতাম-
কল-কল, কল-কল
আর দেখতাম সূর্যের আলোয় চক চক করে ওঠা মাছগুলো
এমনি করে হয়ত সন্ধ্যে নামত,
হটাৎ কোন পাখির ডানা ঝাপটানোতে
চমকে উঠতাম দুজনেই,
আর হেসে উঠতাম
তার পর দুজনে ঘরে ফিরতাম
সেই পাতাগুলোকে মাড়িয়ে
কিন্তু একটুও কষ্ট না দিয়ে।


তারপর হয়তো আমি বসতাম আমার প্রিয় চেয়ারটায়
যেটা থাকত আসন্ন শীতের জন্য জমানো
স্তূপাকার চেরী কাঠ গুলোর পাশে,
তখন হয়ত একটু শীত শীত করত
‘ও’ তখন ফায়ার-প্রেসটায় আগুন দিত
আর ঘরটা ভরে উঠত চেরী কাঠের গন্ধে
আমি তখন কফির কাপটা হাতে,
‘ও’-র দিকে চেয়ে থাকতাম একদৃষ্টিতে
আর ভাবতাম ‘What a wonderful world!’


হয়তো এমনই শীতের রাতে,
আমরা তখন বিছানায়
ঘুম না আসায় গল্পে বিভোর,
‘ও’ তখন তার ছেলেবেলাতে;
সেই হাত ধরে হাটা;
রাস্তায় ছোঁটা;
এক সাথে খেলা,
এমনি কত কি গল্পের শেষে
আমরা আবারও গিয়ে বসতাম সেই নদীটির ধারে
উঠোনটা পেরিয়ে
সেই পাতাগুলোকে মাড়িয়ে
কিন্তু একটুও কষ্ট না দিয়ে


তখন হয়তো নদীতে চাঁদের আলো,
অবাক জ্যোৎস্না,
আমরা সেই জ্যোৎস্নার আলো
গায়ে মেখে এক হয়ে
‘ও’ তখন মায়াবী চোখে
আমার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে
আমরা শুনছি,
নদীর সেই গান,
কল-কল, কল-কল
ওপারে নদীতে তখন
রূপোলী মাছের ঝলকানি..


-ডিসেম্বর, ২০১২
রাজশাহী