।অ্যাক্সিডেন্ট।


অ্যাই , রোককে রোককে.. একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে,
ভীষণ জখম হয়েছে লোকটা।
পা ভেঙে , হাত মুচড়ে কি বীভৎস ভাবে পড়ে আছে, নাক দিয়ে গলগল করে রক্ত,চোখ আধবোজা,
রোককে, ওকে চট করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে, নয়তো বাঁচানো যাবে না।
আরে কন্ডাক্টার, পথ আগলে দাঁড়িয়েছো কি, হটো!
জায়গা করে দাও! কি বললে , এই বাসে ধর্ম আর জাতিভেদ আছে বলে অসুবিধা হবে?
কোথায় ওরা , ডেকে দাও তাদের।
এই যে ভাই ধর্ম, একে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে এনি প্রবলেম?
একটু নাহয় কোণ চেপে বোসো,
আর মহামান্য জাতিভেদ, যেহেতু জানেন না, এ লোকটা নিচু না উঁচু, আপনি একটু পেছনের দিকে চলে যান।
অ্যাই গরীবি, অ্যাই ব্যাটা বেকারি, গাড়িতে যে উঠে বসেছিস, টিকিট আছে?
সে পরে দেখা যাবে খন, আপাতত ধর তো! সাবধানে, সাবধানেএএএ..
আহা শ্রীমান  শিক্ষা, অমন ফুলবাবু সেজে থাকলে চলবে? পোশাকে নাহয় একটু রক্ত লাগুক, আপনি মাথাটা ধরুন,
আর এই যে ম্যাডাম আন্দোলন, ওড়নাটা কোমরে পেঁচিয়ে হাত লাগান।
সিট ফাঁকা করুন,  গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আর সিন্ডিকেট, আপনারা নেমে গেলেই ভালো,
লোকটার একটু আলোবাতাসের দরকার। দেখছেন না, কিরকম গোঙাচ্ছে!
ড্রাইভার, হাসপাতালের দিকে মুখ ঘোরাও, কর্পোরেট নয়, কোনো মানবিক মুখওয়ালা জায়গায়,
যেখানে এম বি এ’র থেকে এম বি বি এস বেশি দর পায়। চিকিৎসা শুরু করতে হবে এখনই।
ওই তো! চোখ খুলছে! কি নাম তোমার ভাই?
বলো বলো, মোবাইল বের করেছি, বাড়ির লোককে খবর দেবো? নাম কি? শুনতে পাচ্ছো? তোমার নামটা বলো!
অ্যাই ড্রাইভার, জোরসে!


ভাঙা দাঁতে ফিসফিসে উচ্চারণ, কিন্তু কি স্পষ্ট... ‘ আমার নাম গণতন্ত্র, নিবাস ভারতবর্ষে..’


আর্যতীর্থ