।ধর্মান্তর।


দেবস্থান ছিলো ঘরে ঘরে এককালে।
একখানা কোণ  ঠিক জুটে যেতো ঈশ্বরের কপালে,
যেখানে মাথা ঠেকিয়ে জন, আশীষ আর ইউসুফ মিশে যেতো সর্বজনগ্রাহ্য ভিড়ে ,
ধর্ম মমতাময়ী মায়ের মতন, দুয়ারে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতো কখন আসবে বাছা ফের ঘরে ফিরে।
সেই সব নিজস্ব দেবস্থানে, মানুষ দুঃখসুখের ঝুলি উপুর করে দিতো আন্তরিক উৎসর্গে,
সৌভাগ্যে ধন্যবাদ দিতো, বিষাদে আঁকড়ে ধরে সামলিয়ে নিতো সব ভিতভাঙা ঝড়কে,
সকলের প্রার্থনা সংসারী ঘেরাটোপে বিনা স্বরলিপি খুব চেনা গান হতো,
কি চাইতে হবে আর কিরকম ভাবে, নিজেদের  হাতে ছিলো সেসব অন্তত।


প্রেক্ষাপট পালটে আজ আকাশকে চুমু খায় উপাসনাস্থল,
কার অট্টালিকায় আজ ঈশ্বরীনিবাস, তাই নিয়ে জ্বলে ওঠে আগুন প্রবল।
উৎসবে ডাক পড়ে আবিদ রহমান জগাই মাধাই মাইকেল বা পিটারের,
শান্তির বার্তা দিতে নয়, শান যাতে দেওয়া হয় আদিম রক্তপায়ী হিংস্রতাদের।
‘ভিন্ন নিশান মানে চরম শত্রু’ ধারণার বিষে ধার্মিক অমানব তৈরীর কারখানাগুলো,
কখন যে গৃহী ঈশ্বরকে ছিনতাই করে নিলো জনতার চোখে দিয়ে সামাজিক ধুলো,
সে খবর ইতিহাস জানে। আমরা দেখেছি শুধু পাল্টেছে ধর্মের মানে,
ঈশ্বর আজ এক ভয়ঙ্করতম সেনানায়কের মতো রোজ যান রক্তের সন্ধানে।


রাস্তায় সমবেত জনতার ঈশ্বর-জয়ধ্বনিতে, আজ তাই মনে শুধু ভয় বয়ে আনে।


আর্যতীর্থ