। এক।


প্রথমে মন দিয়ে ভিন্নতাগুলো জড়ো করো।
তুমি পূর্বের দিকে প্রার্থনা করো, অমুকে পশ্চিমে।
তোমার শুভ সোম, ওর শুক্র, সে আবার রবিবারে উপাসনা করে।
তোমার অনেক দেবতা, আরেকজন মূর্তিহীন, আবার আরেকজন পুজো করে ক্রুশের মানুষ।


আরো আছে,
তোমার নিরামিষ, ওর আমিষ।
তুমি পাঁঠা খাও, শুওর চাখো,
ওপাশের লোকটা গরু খায় , শুয়োরে হারাম
আর ওইদিকে ওই যে বসে আছে,
ও গরু শুয়োর দুটোই সাপ্টে খায়।
তোমাদের উৎসব মেলেনা,
পোশাক মেলেনা, প্রার্থনা মেলেনা।
খুঁজে খুঁজে সব পার্থক্যগুলোকে ঘরের মধ্যিখানে জড়ো করো দেখি!


এইবারে দরজা বন্ধ করে সব খুলে আয়নার সামনে দাঁড়াও।
কি দেখছো? শরীরে তফাত আছে?
সত্তর হাজার বছর এক আছে এই অবয়ব, পরিবর্তনহীন।
তোমারই মতন, পাশের পাড়া,
দূরের জেলা, দূরতর প্রদেশ আর দূরতম দেশেদের মানুষ,
যখনই নিরাবরণ আয়না-সমুখে, এ চেহারা দেখে।


খিদে পেলো বুঝি?
মালা, তসবি ও ক্রুশ,
সকলের রোজ খিদে পায়।
সকলের রুজি খোঁজে রুটি,
ভরপেট থাকাটাই সকলের আদত চাহিদা।


আর ঘর? ওটা দেখবে না?
সব খানে ঘর বাঁধে পুরুষ ও নারী,
স্নেহ মমতায় ভিজে শিশু বড় হয়।
মা আম্মি বা মম, সব ডাকে কচিমুখে ভালোবাসা বয়। পাগড়ি বা ফেজটুপি, সকলেই দিনান্তে ভালোবাসা খোঁজে ,
একটা বিশ্বস্ত কাঁধ, দিনান্তে যার কাছে এসে মুখ গোঁজে।
মৃত্যুতে শোক বড় ধর্মবিহীন,
সেটাও নজরে আনো অশ্রুকে মুছে।


তোমার ক্ষুব্ধ চোখ এবারে দেখুক ফিরে আঁধারের দিকে।
ধর্ষণ। হত্যা। ধর্মের অজুহাতে।
প্রেম জুটি কুটিকুটি নিজেদের ঘরে। ভয় করে?
ভয় করে...


মিলগুলো টেনে নিয়ে এসো ওই অমিলের পাশে।
সাজাও। উঁচু হতে দাও।
দেখতে দেখতে স্তুপ উঁচু হয়ে ছাতকে ছাড়াবে।
আরো উঁচু, খর্ব দেখায় দেখো পাশের ঢিবিটা।
আরো উঁচু,
ক্রমশ পাহাড় হয়ে মিলগুলো ঠিক যেন আকাশকে ছোঁবে।


তফাতেরা পড়ে আছে মিলের পাহাড়টার কত নিচে দেখো।


আসলে নামেই বহু, চেতনা জাগিয়ে নিলে হতে পারি একও।


আর্যতীর্থ