।কবির প্রতীক।


এক খ্যাপাটে কবি ছিলো ,বুনতো কথা খাতায়
প্রজার কথা লিখতো ব্যাটা খেয়ালমতো যা চায়।
অগ্রগতির নামে রাজা আকাশ দেখান সিধে,
এই অভাগা বুঝবে না তা, লিখবে হা’ঘর খিদে।
বেয়াদপি আর কতদিন চলতে পারে দেশে,
রাজপেয়াদা আনলো সভায় বেঁধে অবশেষে।


রাজা দেখেই নাক শিঁটকে বলে দিলেন ‘ মাও’
রাণী বলেন পদ্মের লোক, এক্ষুণি তাড়াও।
মন্ত্রী বলেন স্পষ্ট হাত-ই লিখছে কলমটাকে
পাত্র হাঁকেন বাম নাকি এর পাশের বাড়ি থাকে
সেনাপতি হাত নেড়ে কন বড্ড ঘাসের গন্ধ,
মিত্র বলেন কোটা’র নেতা হচ্ছে যেন সন্দ।
খিলখিলিয়ে হেসে উঠে রাজার বিদূষক,
চেঁচিয়ে বলে, আরে এ তো নেহাত আহম্মক।


ঈষৎ হেসে বললো কবি , হাতদুটো পিছমোড়া
চিনতে আমায় পারলো না কেউ এমন কপালপোড়া।
কোন প্রতীকের গোলাম আমি খোলসা করার আগে
কোনটা আমি নই সেটাকেই দাগাই মোটা দাগে।


রাজামশাই ,লালরঙা নই ,যেমন তুমি ভাবো,
দেশ ছেড়ে আজ কেন হঠাৎ মাও-য়ের কাছে যাবো।
কিন্তু যখন দেশের চাষীর প্রাপ্তি ফলিডল,
কেমন করে মনকে বোঝাই সুখের কলি বল?


না রাণীমা , শতদলের গন্ধতে নেই ঝোঁক,
কেমন করে শুঁকবে ওসব ধর্মবিহীন লোক!
উন্নয়নের গল্পে বাজে চারদিকে খুব  ঢাক
আমার কথা মাছ খুঁজে যায় সরিয়ে প্রতীক শাক।


মন্ত্রীমশাই , কলম আজও হাত ধরেনি কারো,
গরীবকে কেউ ভুল বোঝালে চাইবো হিসেব তারও।
সেনসেক্সের উল্টো চলে শ্রমের ঘামের দাম,
লিখতে সেটা কলমকার কি হতেই হবে বাম?


সেনাপতি জানুন আমি ঘাসের দলেও নই,
সব নেপোদের খবর রাখি মারছে যারা দই।
জাতের নামে ফায়দা তোলার কৌশলীদের দেখে
দেশবিভাজন গাথা কলম নতুন ভাবে লেখে।


শুনেই শুরু রাজার সভায় ব্যাপক কানাকানি
কোথা থেকে এলো এমন প্রতীকবিহীন প্রাণী!
গুজুরগুজুর ফুসুর করে সবাই দিলো রায়,
বিপদ ঘটার আগেই একে ভরো জেলখানায়।


এতদিনে, বললো কবি, গলাতে পাগলামি,
কবি নামের ভার বইবার যোগ্য হলাম আমি।
হে রাজসভা, ভাবেন কেন আমি প্রতীকহারা,
জেনে রাখুন কবির প্রতীক  অদম্য শিরদাঁড়া।


আর্যতীর্থ