।নন্দলাল।


দেশের সেবক বাড়ছে যত, আসছে ততই মন্দকাল
ছিনে জোঁকের মতন এখন দেশ চুষে খায় নন্দলাল।
চাষীর জোটে পেটের খিদে, শ্রমজীবির ব্যর্থ ঘাম,
ভেতরঘরের ভিত ধসেছে, পাঁচিল করে সে চুনকাম।
পুকুর বুজে ফ্ল্যাটবাড়ি হয়, রাস্তার হাল খন্দ খাল
নন্দ এলেই সব ঘেঁটে যায় পড়শী-মিলের ছন্দতাল।


নন্দলাল আজ এই পতাকায়, কালকে ছোটে ভিন জোটে
নিতম্বে চাই গদির ছোঁয়া, যত অধিক দিন জোটে।
বেচতে পারে ভাই বেরাদর , মিষ্টি হলে লাভের গুড়,
মানুষ যে তার সঙ্গে আছে, তাই নিয়ে দেয় জ্ঞান প্রচুর।
স্থায়ী কাজের দাবী যখন ভুখাপেটের ক্ষীণ ঠোঁটে
নন্দ দেখে ঋণখেলাপী ধনীর যাতে ঋণ জোটে।


যেখানে যা টোপ খাবে লোক নন্দ তা দেয় বঁড়শিতে,
বর্ষা হলে শরৎ দেখায় গরম শোনায় ঘোর শীতে।
চোস্ত গলায় বিষাদ ঢেলে বক্তিমে দেয় নন্দলাল
‘পুচ্ছ তোলো গুচ্ছ বেকার, আসছে কাজের গন্ধ কাল।
ঝান্ডা তুলেই চাকরি হবে, মিছিল লাগাও চরকিতে’
ক্ষইলো আশায় সাতটা জুতো, বক্র হাসে পড়শিতে।


দেশের এত দায়িত্বে সে , বাথরুমে তার ঠান্ডাকল,
( এসি ছাড়া আসে কি আর দেশের সেবার ফান্ডা, বল?)
ভোটের সময় অবশ্য তার অন্যরকম কান্ডখান
ধান কেটে যান চাষীর ক্ষেতে, পাড়ার মোড়ে যান দোকান
ছবি বেরোয় প্রথম পাতায়, সবার সাথে আন্ডা ঝোল,
দুঃখীজনের জন্য তখন উথলে ওঠে কান্নারোল।


ধর্ম নিয়ে ধন্দ হলেই গজিয়ে ওঠে নন্দলাল,
ঠিক জানে সে কুসংস্কারে কোথায় মনের অন্ধ হাল।
অবিজ্ঞানে আস্কারা দেয় ভোট পাবে সে এই লোভে
সুকৌশলে ফুলকি ছড়ায় জাত বা কোটার বিক্ষোভে।
সে জানে এই জাতের বিভেদ জ্ঞান ঢাকা নিরন্ধ্র ঢাল,
যে ভাবে হোক কুর্সিটি চাই, কাটবে তোফায়  পঞ্চ সাল।


দ্বিজেন্দ্রলাল, তোমার দেশে এখন হাজার নন্দলাল।


আর্যতীর্থ