। জল।


আধবুড়ো লোক,  হাঁটছে একটু নুয়ে,
বড্ড গরম, মুখমাথা সব গামছা দিয়ে ঢাকা
বৃষ্টিখেকো এই গরমে আগুন ছোটে ভুঁয়ে
এর মধ্যে মাঝদুপুরে বুড়োর বাইরে থাকা
কেমন কেমন লাগে।   বোঝা গেলো কেন
পেছন পেছন ছুটন্তপ্রায় রোদচশমা বাবুর দল
খরা নিয়ে রিপোর্ট যে চাই যেন তেন প্রকারেণ
শহুরেরা তাই ধরেছে  গাঁয়ের বুড়ো মোড়ল।


ধু ধু বালি মাঝখানে ঠিক চিকচিকাচ্ছে জল
বালির খাদান?  প্রায় তেমনি দেখায় এখন নদী
আশেপাশের দশটা গাঁয়ের ওইটুকু সম্বল
বুড়ো তাকায় আকাশপানে। বৃষ্টি হতো যদি....
ইচ্ছেই সার। শুকনো বালি রোদে তেতে পুড়ে
ঘোলা জলে কলসি ভরে গাঁয়ের মানুষ যায়
বাবুরা সব দাঁড়িয়ে আছেন গাছের ছায়ায় দূরে
গরম হাওয়া ঝাপ্টে এসে দিচ্ছে ছ্যাঁকা গায়।


'এই গাঁয়ে আজ প্রতি ঘরে জলের হাহাকার'
বুড়ো বলে, শুকনো জিভে ঠোঁটদুটো নেয় চেটে
ও বাবুরা,  দোহাই, একটা হোক না প্রতিকার
গাঁয়ের লোকে জল নিতে যায় পাঁচ ছ মাইল হেঁটে।'
বাবুরা কন ' দেখেই গেলাম খরায় কেমন হাল
সবুর করুন,  সঠিক রিপোর্ট যাওয়াটা দরকার,
কাজ হয়না বলে লোকে খামোখা দেয় গাল
জেনে রাখুন ব্যবস্থা ঠিক নেবে এ সরকার।'


গাঁয়ের পথ ছাড়িয়ে গেলো বাতানুকূল গাড়ি
ঠাণ্ডা হাওয়ায় হাঁফ ছেড়েছেন বাবুরা সকলে
দারুন স্পিডে রাস্তা ধরে শহরপানে পাড়ি
হাতে হাতে বোতল ধরে চিলড বিয়ার চলে।
পথের ধারে ধুসর ঝোপে জলের চিহ্ন নেই
সেদিকে চোখ যাওয়ার পরে বাবুরা গম্ভীর
একজন তো বলেই ফেলেন ধরা গলাতেই
' মনে হচ্ছে দাম বাড়বে এবার বিসলেরির'।


আর্যতীর্থ