। নিজকিয়া।

কোনক্রমে পথ পেরিয়ে উৎসুকদের চোখ এড়িয়ে পৌঁছে গেলাম নদীর পার। কোন নদী সে? গেলাম কিসে? সেই খবরে কাজ কি বাপু? থাকুক সে নাম আমার কাছে, শুনেছি তো ছোটো থেকেই বাতাসেরও কান আছে। এই নদীটাই কিশোরবেলার একলা থাকার বালির চর, অন্য সময় শুকনো থাকে, বর্ষাকালে ভয়ংকর। সবসময় কি একলা ছিলাম, দোকলা থাকাও এখানে শুরু, এখানেই তো অপেক্ষাতে হৃৎপিন্ডের প্রথম দুরু। কত বয়েস তখন যেন, পনেরো বা ষোলোই হবে, নদীর পাড়ে দুজন বসে প্রথম প্রেমের অনুভবে। দুই আনাড়ির প্রথম চুৃুমু ঠোঁটের সাথে ঘষলো ঠোঁটে, ভাবলে সেসব এই বয়সেও গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। এতদিন বাদে সেই মেয়েটা হঠাৎ করে দেখা করতে বলেছে এইখানে,
কেন, সেটা শুধু ওই মেয়েটাই জানে। মাঝবয়েসের সাবধানতায় জলাঞ্জলি দিয়ে, গোপনে এসেছি এই নদীতটে পালিয়ে। ওই তো সে, একটু মোটা হয়েছে, মুখের হাসিটা তো দেখছি সেই একই রয়েছে!  হেসে এগিয়ে জিজ্ঞেস করি, হঠাৎ কেন এ পাগলামি? মেয়ে অমনি ঝামটা দিয়ে বলল, ' তোমার মত বুড়িয়ে যাই নি আমি। এখনো ওই পাথরটার ওপর লেখা তোমার আমার নাম' চশমাপড়া চোখ কুঁচকে আমিও দেখলাম, তিরিশ বছর পরে আজও পড়া যায় পাথরের গায়। কিছু বলতে যাচ্ছিলাম প্রেমে গদগদ হয়ে, হঠাৎ গাছের আড়াল থেকে বেড়িয়ে এলো আমার দুই মেয়ে। সটান দাঁড়ালো আমার কিশোরবেলার প্রেয়সীর কাছে গিয়ে, যেমন দাঁড়ায় রোজ, ছোটটি চেঁচিয়ে বলে, ' বলো না মা, ঠিক কোথায় বাবা করেছিল প্রপোজ? '

আর্যতীর্থ