।   পুত্রং দেহি।

একজন নারীর বেদীর কাছে জড়ো হয়েছে একগুচ্ছ পুরুষ নারী
সুস্নাত, নববস্ত্রপরিহিত, কায়মনোবাক্যে শুদ্ধাচারী,
সবাই পুষ্প অর্ঘ্য নিয়েছে অঞ্জলি করপুটে,
হৃদয়ের আকুল আকুতি মুখে উঠেছে ফুটে,
জনতা সমস্বরে বলে চলেছে 'মা,  পুত্রাং দেহি, পুত্রাং দেহি..
ত্রিনয়নী ভাবছেন, তিনি অশুভহন্তারক, অসুরবিজয়ী,
তবুও তার সন্তানদের নারীর ক্ষমতার ওপর এতটুকু ভরসা হলো না কেন?
আয়ু যশ ভাগ্য বা অর্থের মতো, পুংসন্তানও এক ঐশ্বর্য্য যেন।
দেবী ত্রিনয়ন উন্মোচনে দেখলেন, অসংখ্য নরনারী হেঁটে চলেছে মোমবাতি নিয়ে ,
পুরুষের হাতে ধ্বস্ত নারীর প্রতিবাদে অনন্ত পদযাত্রী চলেছে এগিয়ে,
অথচ, সেই একই মানুষেরা পু্ত্র হবার বর চাইছে আকুল প্রার্থনায়!
দেবী বিষণ্ণ হলেন, স্তম্ভিত হলেন। মন্ত্রে কি ভুল হয়ে গেছে কোনো জায়গায়?
নাকি নারীকে শক্তি হিসেবে পূজা করা মানবের কল্পনা কেবল?
বাস্তবে তাঁর সন্তানেরা কি এত হীনবল,
যে  তাঁর মতো কোনো নারীও আসতে পারেনা কাঙ্খিত সন্তান হয়ে?
অভয়া ত্রিনয়ন মুদে শিউরে উঠলেন এক  অজানা ভয়ে...

আর্যতীর্থ