। বাতিল সাজ।


পুজো চলে গেলে এত আয়োজন কোনখানে নেয় সব?
ফাঁকা মন্ডপে গল্পরা চুপ শেষ হলে উৎসব।
এতদিন ছিলো বড় ছুতমার্গ কেউ দেখে যদি ছুঁয়ে
আসলের মতো অবিকল করা শোলা মাটি বাঁশ দিয়ে
বুকের পাঁজর করে রাখা ছিলো এই সবে গতকাল,
আজকে সে সব বিগত সজ্জা ফুৎকারে জঞ্জাল।
বাঁকুড়ার ঘোড়া, নাচের মুখোশ, ডোকরার কাজ,
শাঁখা পলা, বেলনা ও চাকি, চুমকি আয়না, জরি দিয়ে সাজ,
বিগত চারটে মাস পরম মমতায় যারা বসেছিল মন্ডপে, প্রতিমার গায়ে,
কি করুণ পরিণতি  ট্রাক ঠেলাগাড়ি চেপে অখ্যাত, অনামী বিদায়ে।
ঠিক যেন জীবন মঞ্চস্থ করে নিজের জীবনীখানা এই চারদিনে,
বোধনের থেকে তিলে তিলে গড়ে ওঠা নাটকের সিনে
লোকসমাগম হয়, সবাই তারিফ করে আভরণ সংগ্রহ দেখে,
জীবন গর্বভরে ব্যপ্ত হয় শিরোপা ও শংসার আস্তরণ মেখে,
তারপর, সব অন্ধকার। প্রদীপটা নিভে গেলে এক ফুৎকারে,
তকমা ও শিরোপারা বাতিল কাগজ হয়ে পড়ে থাকে কোণে, একধারে,
অধুনা উধাও সামগ্রীর নপুংসক বিজ্ঞাপণ যত,
উৎসবশেষে বাতিল মণ্ডপসজ্জার মতো।


আর্যতীর্থ