। কাকতালীয়- বাকিটা।

দাদারা আছেন কেমন, সংসারে ভালো তো সব?
আমি ফের ফিরে এলাম,আবারো বলতে ওসব।
একটু করাই মনে, জানি তো গেছেন ভুলে
বের করে আনি আবার, স্মৃতিদের দরজা খুলে।
সেই যে ভিনশহরে, পেলাম এক পুরোনো খৎ
হঠাৎই পালটে গেলো, রুটিনের চেনা জগৎ।
যাচ্ছি ট্যাক্সি ধরে, অচেনা সেই ঠিকানায়
দশটা বছর যেন, গেছে কেটে এক লহমায়।
আসলে কাটেনি তা, সময় কি গোলাম নাকি?
হয়তো দেখবো গিয়ে, ঠিকানা বেবাক ফাঁকি।
ট্যাক্সি চলতে থাকে, পেরিয়ে অলি গলি
আমিও নিজের মনে, অতীতের সঙ্গে খেলি।
দুম করে ঝটকা লাগে, ঠিকানায় পৌঁছে গেছি
দেখবো ভাগ্য কেমন, খেলেছে কানামাছি।
বাইরে নামটা দেখি, মোটে নয় চেনা চেনা
বাপ মা’র নাম যা জানি, ফলকে তা মেলেনা।
একটু মুষড়ে পড়ে, দরজার ঘন্টা টিপি
কি যে ঠিক খবর পাবো, বাড়ছে বুকের ঢিপি।
দরজা খুলে দাঁড়ান, মহিলা অবাক চোখে
আওড়াই কোনক্রমে, স্মৃতি থেকে নামগুলোকে।
ওরা তো বহুদিনই, গিয়েছে বাড়ি ছেড়ে
মনে হলো পায়ের মাটি, ভগবান নিল কেড়ে।
ঠিকানা আছে কিছু?আমতা তুতলে বলি
মহিলা মাথা নাড়েন, ভাবলাম ফিরে চলি।
হঠাৎই ডেকে বলেন, দাঁড়াও হচ্ছে মনে
নম্বর একটা বোধহয়, রয়েছে মুঠোফোনে।
নম্বর পেয়ে গিয়ে, চট করে ডায়াল করি
প্রথমে রিং হয়ে যায়, তবুও ধৈর্য ধরি।
পুরুষ এক কণ্ঠ শুনে, প্রেমিকার নামটা বলি,
আমি কে সেটা শুনে, কণ্ঠ চুপ কেবলই।
অবশেষে বলেন তিনি, এখানে থাকেনা সে
বলেছে মুখের ওপর, ভিনভাষী ভালোবাসে।
বিবাহের কথা হতেই, ছেড়ে চলে গেছে সে ঘর
ওর মার কাছে আছে, এক শুধু ফোন নম্বর।
তুমি কে জানি আমি, নম্বর দিলাম দিয়ে
আমার আর আপত্তি নেই, সেটুকু দিই জানিয়ে।
আমি তো ফোনটা ছেড়েই, নম্বর করি ডায়াল
আওয়াজে হলো মনে, কোথায় যে হাওয়া দশ সাল।
কোথায় সে আছে শুনে, চোখ যায় চড়কগাছে
সবারই অজান্তে সে, আমারই শহরে আছে।
তারপর আর কি হবে, যা হবার তাই তো হলো
এই তো গতকালই, বার্ষিকী পেরিয়ে গেলো।
গল্প শুনলেন তো, এবারে কাজেতে যান
আমাকেও গিন্নি ডাকেন,মানেমানে দিই পিটটান।

আর্যতীর্থ