। পথিক।

ইচ্ছে ছিল সঙ্গী খুঁজে ঘর বাঁধবো পথের ধারে
ইচ্ছে ছিল সাঁঝবাতি কেউ জ্বেলে দেবে অন্ধকারে
নষ্ট আশার কষ্ট নিয়ে পা দুখানা  হেঁটেই গেল
খন্দখানায় হোঁচট খেয়ে দিন কেটে রোজ সন্ধ্যা হল
পথই আমায় ঠিকানা দেয় ঘরের দাওয়ায় কেউ  ডাকেনা
পথের ধুলো পড়লে ঘরে গেরস্থালীর মান থাকে না।
সাঁঝের বেলায় ক্লান্ত বসে অচিন কোনো সরাইখানায়
কোথাও দূরে  শাঁখের আওয়াজ শেষ আলোকে বিদায় জানায়।
কল্পনাতে কোন অতীতের ঘোমটা টানা কপালে টিপ
শাঁখানোয়া পরা দুহাত তুলসীতলায় জ্বালছে প্রদীপ
নিকানো এক ছোট্ট উঠান জল দিয়ে ওই ধুলো সবে
স্বপ্নগুলো ঝাপসে আসে শেষবিকেলের অনুভবে।
এখন তো সব ওলটপালট,  পথের নেশায় চরৈবেতি
শাঁখের আওয়াজ বলছে আমায়, ভালোবাসা তুইও পেতি।
একটু যদি মানিয়ে নিতি আর পাঁচজন মানায় যেমন
অন্য সবাই ঘরমুখো যায় তোকেই দেখি পথ উচাটন।
সত্যি কি তাই? পথিক আমি চলার নেশায় শুধু নাকি?
পথ হারানো নদীর মতো খামখেয়ালে চলতে থাকি?
তাই যদি হয়, কেন তবে তুলসীতলা ঈর্ষা জাগায়?
কেন তবে আজও ভাবি কেউ ঘরে ঠিক ডাকবে আমায়?
আমার নামে টিপ পরে কেউ তুলসীতলায় পিদিম দেবে
ফিরলে ঘরে ভালোবাসায় বাকির হিসেব বুঝে নেবে।
সব পথিকের পথের শেষে ঘরে ফেরার স্বপ্ন থাকে
হোঁচট খেয়ে পথে চলা সেই অচেনা ঘরের ডাকে
আমিও তো ঘরের লোভে খুঁজছি সাকিন, খুঁজছি দেশও
যেখানে কেউ বলবে আমায় মাথার দিব্যি ফিরে এসো।

আর্যতীর্থ

.