।   ঝালমুড়ি।

জীবন শুধু সামনে ঠেলো, তোমার ক্ষুরে গড় করি,
একটুখানি দাও না সময়, খুলি স্মৃতির খড়খড়ি।
মলগুলোতে লোকজনে খায় একশো টাকার ভেলপুরি
ফেরাও আমায় মিলতো যখন একটি টাকায় ঝালমুড়ি।

হেদুয়া থেকে কচরমচর এক ঠোঙাতে কলেজ স্ট্রিট
মাসের শেষে পকেট ফাঁকা দামী মিনিবাসের সিট।
রাইয়ের তখন বেড়া বেনী, বিমলস্যারের টিউশানি
এগাল ওগাল চিবিয়ে মেটাই দাঁড়িয়ে থাকার হয়রানি।

সময়মতো রাই বেরোলে ভাগ হয়ে যায় এক ঠোঙা
ঝাল লঙ্কায় কামড় দিয়ে রাইয়ের আনন লালরঙা
উপচানো চোখ মুছিয়ে দিতে কোমল গালে রুমালহাত
প্রথম ছোঁয়ার সুযোগ দিলি ঝালমুড়ি তুই জিন্দাবাদ।

একলা প্রথম মামার বাড়ি রেলের গাড়ি দুর্গাপুর
পকেট ভরে একশো টাকা দুনিয়া বলে জী হুজুর।
বর্ধমানে এক ঠোঙা নিই পেট ভরে যায় তা খেলে
প্রথম দেখা ঝালমুড়িটা সাজিয়ে দেওয়া নারকেলে।

কলেজকালে হাতে পেলাম বাবার স্কুটার দুচাকা,
ঝালমুড়িরও দাম বেড়েছে, ক্রমে ক্রমে দুটাকা।
ভটভটিয়ে রাই চাপিয়ে কলেজ কেটে গড়ের মাঠ
ভিক্টোরিয়ার মুড়ির ঠোঙা সোঁ করে যায় বাবুঘাট।

এখন আমি অনেক বড়,  ক্রেডিট কার্ডও অনেকগুলো
এগিয়ে যাওয়ার তাড়ায় থাকি, স্মৃতির ঘরে জমছে ধুলো।
জীবন থেকে মাঝে মাঝে করি যখন সময় চুরি
পিছু ডাকে হারিয়ে যাওয়া এক দুটাকার ঝালমুড়ি।

আর্যতীর্থ