।কৃষ্ণের চিঠি।
কোনোদিনও চিঠি তোমায় লিখি নি, হে রাই।
তুমিও কি পত্র লেখার কথা ভেবেছো কখনো ?
যমুনাতীর, কদম্ববন, মনে রেখেছো আজও?
জানো, এখনও পূর্ণিমাতে আমি একা বাঁশি বাজাই...
অন্যসময় মেতে থাকি বিভিন্ন সব কাজে,
কম কথা নয় সামলে রাখা এই রাজ্যপাট
কোন অতীতে ছেড়ে আসা ব্রজভূমির স্মৃতি,
স্বপ্ন হয়ে দেখা দিতে আসে মাঝে মাঝে।
তুমিও আসো, শয়নে না, রাত্রি জাগরণে,
বাতায়নে নিভু নিভু হয়ে প্রদীপ জ্বলে,
ঘুমিয়ে যখন এই দ্বারকা, নগর অন্ধকার,
আমায় তখন জাগিয়ে রাখো নূপুরনিক্বণে।
গবাক্ষতে চাঁদের আলো, জোছনাউজল রাত,
অন্তঃপুরে রানীরা সব ঘুমিয়ে নিঃসাড়ে,
আঁধার কক্ষে নির্নিমেষে অনন্তকে গুনি,
চমকে উঠি, তোমার সুবাস ঘরে অকস্মাৎ!
এখানকার যে বৃষ্টি, সে নয় বৃন্দাবনের মতো।
সেখানে তো বৃষ্টিফোঁটার খোলা আমন্ত্রণ,
যমুনা আর বৃষ্টি যেন আজন্মকাল সখী,
এখানে সে নিতান্ত এক ব্রাত্য বহিরাগত।
মেঘে ঢাকা আকাশ দেখে বৃষ্টি আসবে বুঝি,
বের করে নিই লুকিয়ে রাখা চেনা শিখীর পালক,
পীতচূড়ায় মুরলীধর ক্ষণিক সাজার ছলে
আমি আমার ফেলে আসা রাইকিশোরী খুঁজি।
ভাবতে পারো, এ সমস্ত স্তোকবাক্যই শুধু
রাজত্ব আর রাজকন্যের মাঝে বসত করে
দ্বারকাধীশ ভালোই আছেন,জীবন কাটান সুখে
শ্যামলিমায় কে আর খোঁজে উষর মরু ধুধু!
দুর্ভাগা তো আমি গো রাই, তোমার কানাই!
রাজনীতি আর কূটনীতিতে এত তুখোড় যিনি
প্রেমের হাটে তাঁর যে কেবল কানাকড়ির দাম
এত রকম কাজের ছুতোয় ভুলে থাকি সে কথাটাই।
নিস্ফল প্রেমিক আমি, সব পেয়ে তবুও একাকী।
প্রদোষকাল আসন্ন, মন্দিরে শুরু হবে ঘন্টাধ্বনি
নির্ঘুম কেটে গেলো আরও এক জীবনের রাত।
আবার সাজবো রাজা, আরও একবার দিতে সকলকে ফাঁকি..
আর্যতীর্থ